আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ হেরাতে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৭ জন শিশু রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাতে প্রাদেশিক রাজধানী কাবুলগামী একটি যাত্রীবাহী বাস ট্রাক ও মোটরসাইকেলের সঙ্গে সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
হেরাতের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের তালেবান নিয়োজিত কর্মকর্তা আহমাদুল্লাহ মোত্তাকি জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসটি ইরান থেকে ফেরত পাঠানো আফগান নাগরিকদের বহন করছিল। সংঘর্ষের পরপরই বাসটিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়, ফলে অধিকাংশ যাত্রী বের হওয়ার সুযোগ পাননি। এ ছাড়া ট্রাক ও মোটরসাইকেলের আরোহীদেরও প্রাণহানি ঘটে।
স্থানীয় পুলিশের বরাতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, বাস চালকের বেপরোয়া গতি ও অবহেলার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে বাসটির ধাক্কায় একটি মোটরসাইকেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি একটি ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা খায় এবং মুহূর্তের মধ্যে আগুন ধরে যায়।
বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৭ জন শিশু ছিল। দুর্ঘটনার ভয়াবহতায় বাসটির পুরো কাঠামো ভস্মীভূত হয়ে যায়।
আফগানিস্তানে সড়ক দুর্ঘটনা প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা। দীর্ঘ যুদ্ধ ও সংঘাতের কারণে দেশের সড়ক অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একই সঙ্গে ট্রাফিক আইন অকার্যকর থাকায় দুর্ঘটনার সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
দুর্ঘটনায় নিহত যাত্রীদের বেশিরভাগই ইরান থেকে জোরপূর্বক ফেরত পাঠানো আফগান নাগরিক। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তেহরান নথিবিহীন আফগানদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করছে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ১৫ লাখেরও বেশি আফগান নাগরিক ইরান ত্যাগ করেছেন।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, তালেবান শাসিত বর্তমান আফগানিস্তান এই বিপুল সংখ্যক ফেরত আসা নাগরিককে পুনর্বাসন করার সক্ষমতা রাখে না। দেশটি ইতোমধ্যেই পাকিস্তান থেকে ফেরত আসা অভিবাসীদের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে।
এফপি/রাজ