বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সংস্কার এবং জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। তিনি ঘোষণা দেন, ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এ অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যাতে প্রকৃত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায়।
মালয়েশিয়ার Universiti Kebangsaan Malaysia (UKM) থেকে সম্মানসূচক ডক্টর অফ ফিলোসফি ইন সোশ্যাল বিজনেস ডিগ্রি গ্রহণ উপলক্ষে বুধবার (১৩ আগস্ট) বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
প্রফেসর ইউনূস বলেন, “আমাদের লক্ষ্য স্পষ্ট, পরিকল্পনা বিস্তারিত এবং সংকল্প দৃঢ়। একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল বাংলাদেশ গড়তে হলে অর্থনীতিতে মৌলিক পরিবর্তন প্রয়োজন। এজন্য উদ্যোক্তাদের সহায়তা, শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করতে হবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে তরুণদের নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থান দেশের জাতীয় পরিচয় ও ভবিষ্যতের আশাকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। “আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে শাসন হবে ন্যায়ভিত্তিক, অর্থনীতিতে থাকবে সবার অংশগ্রহণ, এবং প্রতিটি নাগরিকের থাকবে সাফল্যের সমান সুযোগ,” বলেন তিনি।
নিজের জীবনপথের কথা স্মরণ করে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ইউনূস বলেন, “মানুষ দরিদ্র নয় কারণ তাদের মেধা বা স্বপ্নের অভাব আছে, বরং কারণ সিস্টেম তাদের ন্যায্য সুযোগ দেয়নি। আমাদের আর্থিক ব্যবস্থা ধনীদের জন্য তৈরি, দরিদ্রদের জন্য নয়—এ কারণেই আমি ক্ষুদ্রঋণ ও সামাজিক ব্যবসার ধারণা চালু করেছি।”
এই সম্মানসূচক ডিগ্রি প্রাপ্তিকে তিনি বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে পাওয়া এক সম্মান হিসেবে উল্লেখ করেন। “তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণের জন্য কাজ করাই এখন আমার দায়িত্ব। গত বছর অসংখ্য ছাত্র ও যুবক একটি উন্নত, ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যতের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছে,” বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এ জাতীয় নির্বাচনের সময়সূচি নির্ধারণ করা হবে রমজানের আগেই, যা দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এফপি/রাজ