নওগাঁর মান্দা উপজেলায় এক নির্বাচন কর্মকর্তাকে তাঁর কার্যালয়ে ঢুকে ‘দেখে নেওয়ার হুমকি’ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুয়া শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় সেবা প্রত্যাশী এক নারী এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ। এ ঘটনায় নির্বাচন কর্মকর্তা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ৭ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) দুপুরে। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাঈফ আহমেদ নাসিম মান্দা থানায় করা জিডিতে জানান, দুপুর ৩টার দিকে এক নারী তাঁর কক্ষে ঢুকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং এনআইডি সংশোধনের আবেদন বাতিল হওয়ার জন্য তাঁকেই দায়ী করেন। একপর্যায়ে ওই নারী হুমকি দিয়ে বলেন, ‘আপনার চাকরি খেয়ে ফেলব, এই উপজেলা থেকে তাড়িয়ে দেব।’
জমাকৃত ফাইল থেকে জানা যায়, ওই নারীর নাম আমেনা খাতুন, গ্রাম পানিয়াল।
মান্দা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাঈফ আহমেদ নাসিম জানান, আমেনা খাতুন ইতোমধ্যে তিনবার বয়স ও পিতার নাম সংশোধনের জন্য আবেদন করেছেন। এর আগের দুটি আবেদন যথাযথ তথ্যপ্রমাণ না থাকায় বাতিল হয়। সর্বশেষ আবেদনের তদন্তভার তাঁর ওপর পড়লে তিনি নিয়ম অনুযায়ী তদন্ত শেষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠান। কিন্তু সেটিও অনুমোদিত হয়নি।
জিডিতে আরও উল্লেখ করা হয়, আবেদনকারী আমেনা খাতুন ৫ম শ্রেণি পাশ হলেও ৮ম শ্রেণি পাশের ভুয়া সনদ দিয়ে পানিয়াল আদর্শ কলেজে আয়া পদে চাকরি নিয়েছেন। এনআইডিতে বয়স কমিয়ে বর্তমান বয়সের সঙ্গে সামঞ্জস্য করতে বারবার আবেদন করে যাচ্ছেন। তদন্তে দেখা যায়, এভাবে বয়স কমালে তার সন্তানদের তুলনায় মা ছোট হয়ে যান, যা আইন ও বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
ঘটনার সময় অফিসে উপস্থিত ছিলেন সহকারী নির্বাচন কর্মকর্তা ছাড়াও দুইজন সেবা প্রার্থী- শিপন ও খোকন। তাঁদের সামনেই লাঞ্ছিত হন বলে দাবি করেন কর্মকর্তা।
এ ঘটনায় নির্বাচন কর্মকর্তা বিষয়টি মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ওসি, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে অবহিত করেছেন। পাশাপাশি ভবিষ্যতে নিরাপত্তা ঝুঁকি থেকে বাঁচতে মান্দা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
এ বিষয়ে মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর রহমান বলেন, “এ ঘটনায় নির্বাচন কর্মকর্তা একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
এফপি/রাজ