সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের বক্তারপুর গ্রামের একটি কালভার্ট ভেঙে পড়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন অন্তত আট হাজার মানুষ। বিশেষ করে তিনটি স্কুল, একটি মাদ্রাসা ও একটি নুরানি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন প্রতিদিন।
বক্তারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন হেলাল খসরু হাইস্কুল, লিয়াকতগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়, চামতলা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও দারুল কোরআন নুরানি মডেল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের চলাচলের প্রধান সড়কের মাঝখানে অবস্থিত কালভার্টটি গত বছর আগস্ট মাসের দিকে ভেঙে খালের মধ্যে পড়ে যায়। এরপর থেকে বক্তারপুর, বাঘমারা, বহরগাঁও, কান্দাগাঁও ও পূর্ব দিঘির পাড়সহ আশপাশের গ্রামগুলোর মানুষ লিয়াকতগঞ্জ বাংলাবাজারে যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, বক্তারপুর উত্তরপাড়া থেকে ক্যাপ্টেন হেলাল খসরু হাইস্কুল পর্যন্ত যেতে হলে নদীর পূর্ব পাড়ে দেড় কিলোমিটার এবং বক্তারপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে লিয়াকতগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজে যেতে খেয়াঘাট পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা অতিক্রম করতে হয়। বর্ষাকালে এসব কাঁচা রাস্তা কাদায় একেবারে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এর সঙ্গে প্রায় এক বছর ধরে যুক্ত হয়েছে ভাঙা কালভার্টের সমস্যা।
কলেজ শিক্ষার্থী মোস্তাক আহমেদ ফাহাদ বলেন, “কালভার্ট ভাঙার পর বাধ্য হয়ে জমির আইল ধরে চলাচল করতে হয়। এই পথে সাইকেলও চালানো যায় না।”
লিয়াকতগঞ্জ বাজারের প্রবীণ ব্যবসায়ী মো. হারিছ আলী বলেন, “জনপ্রতিনিধিরা কেবল আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন। দুই যুগ ধরে রাস্তা উন্নয়নের কথা শুনছি, বাস্তবে কিছুই হয়নি। এরমধ্যে কালভার্টটিও ভেঙে পড়েছে। মেরামত হচ্ছেনা। শিক্ষার্থী ও কৃষকদের কষ্ট বেড়েই চলেছে।”
মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন হেলাল খসরু হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ফারুক আহমদ বলেন, “ভাঙা কালভার্টের কারণে অনেক শিক্ষার্থী দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে স্কুলে আসে, কেউ কেউ আসতেই পারে না। এটি দ্রুত সংস্কার হওয়া প্রয়োজন।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য ওমর গনি বলেন, “কালভার্টটি ভেঙে যাওয়ার পর আমি ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রকৌশলীকে জানিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত এটি মেরামত কিংবা নতুন করে নির্মাণের কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।”
লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম জানান, “ইউনিয়ন পরিষদে এখন কোনো বরাদ্দ নেই। বরাদ্দ আসলে কালভার্ট মেরামত করা হবে।”
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইয়ো) লুৎফুর রহমান বলেন, “বক্তারপুরের ভাঙা কালভার্টের বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য আমাদেরকে জানিয়েছে। আমি সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যকে নিয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।”
এফপি/রাজ