দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে ভরা বর্ষা মৌসুমে প্রচন্ড তাপপ্রবাহ চলতে থাকায় পানির অভাবে আমন চারা রোপন নিয়ে বিপাকে পরেছে চাষিরা। সময় পার হতে থাকায় শ্যালো মেশিন ও বৈদ্যুতিক মটর ব্যবহার করে সেচ দিয়ে আমন চারা রোপন কাজ শুরু করছেন। তবে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে শ্রমিক সংকটের কারণে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে আমন রোপন করতে হচ্ছে। এতে বিঘা প্রতি গুণতে হচ্ছে ৪ থেকে ৬ হাজার টাকা বাড়তি খরচ।
এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার মহিষমারী গ্রামের রবি মৌসুমে আলু, রসুন, পেঁয়াজ ও শাক-শবজি চাষযোগ্য জমিগুলোতে আমন চাষের ভরা মৌসুম চললেও বৃষ্টির অভাবে শুকিয়ে রয়েছে। এ অবস্থায় চাষিরা শ্যালো মেশিনের সেচ দিয়ে রোপা আমন চাষের কাজ শুরু করেছেন। শত শত একর জমি এখনও চারা লাগানোর জন্য প্রস্তুত করা হয়নি।
কথা হয়, উত্তর নশরতপুর ফকিপাড়া গ্রামের উজ্জল হোসেন, আব্দুল জলিল, হযরত আলী, খামার বিষ্ণুপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল সোবহানসহ অনেকের সাথে। আব্দুল সোবহান বলেন, আমার এসব জমি এবং পাশের জমিগুলোতে আমারা রবি মৌসুমে নানা ধরণের অর্থকরি সবজি চাষ করি। তাই এ জমিগুলোতে আগাম আমন চাষ করতে হয়। এ বছর আকাশের বৃষ্টি না থাকায় বেশ খানিকটা সময় পেরিয়ে গেছে। শেষমেষ শ্যালো মেশিন লাগিয়ে সেচ দিয়ে পঞ্চাশ শতক পরিমাপের ৮ বিঘা জমিতে রোপা আমন চারা লাগাচ্ছি।
একই ভাবে পার্শ্ববর্তী জমির মালিক কায়ছার আলী, ভাদু চন্দ্র, হরিপদ রায়, শিরিশ চন্দ্র রায়সহ অনেক শ্যালো মেশিনের সেচ দিয়ে প্রায় তেইশ বিঘা জমিতে আমন চারা রোপন করেছেন। সেচ দিয়ে চাষকরা জমিগুলোতে ৩-৪ ঘণ্টা পানি থাকছে। তাই আমন ক্ষেত রক্ষা করতে প্রতিদিন পানি সেচ দিতে হচ্ছে।
চাষিরা জানান, সেচের পানি দিয়ে আমন চাষ করতে প্রায় ৪ থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে। জমিতে সেচের পানি ধরে রাখতে চাষিরা প্রতি বিঘা জমিকে কয়েক খণ্ডে ভাগ করে চাষাবাদ করছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, এবার উপজেলায় আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৩ হাজার ৭৬২ হেক্টর। এখনই আমন চারা রোপনের উপযুক্ত সময়। অনাবৃষ্টির কারণে সেচ দিয়ে চারা লাগানোই উত্তম। বৃষ্টির অপেক্ষায় থেকে চারার বয়স বেশি হলে ফলন বিপর্যয় ঘটতে পারে।
এফপি/রাজ