‘প্লাস্টিক দূষণ আর নয়, বন্ধ করার এখনই সময়’ স্লোগানে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন উপলক্ষে নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগ শেরপুর জেলা কমিটি স্কেটিং রাইড, বৃক্ষরোপণ অভিযানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে।
এ উপলক্ষে ৩ জুন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টায় শহরের রঘুনাথ বাজার থানার মোড় থেকে ৪৫ কিলোমিটার রোলার স্কেটিং রাইড শুরু হয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও স্থলবন্দর বাইপাস মহাসড়কের অরণি প্রগ্রেসিভ স্কুলে গিয়ে শেষ হয়।
স্কেটিং রাইড উদ্বোধন করেন সমাজসেবী রাজিয়া সামাদ ডালিয়া ও জনউদ্যোগ কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য সচিব তারিক মিঠুল। প্রশিক্ষক সানোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে স্কেটিং রাইডে অংশগ্রহণ করেন শেরপুর জেলা রোলার স্কেটিং ক্লাবের ক্ষুদে স্কেটাররা।
পরে অরণি প্রগ্রেসিভ স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘গাছ লাগাই, পরিবেশ বাঁচাই, নিজে বাঁচি, প্রাণপ্রকৃতি, বন্যপ্রাণী রক্ষায় আসুন সবাই সচেতন হই’- শিরোনামে বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব শীর্ষক উদ্দুদ্ধকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ নাজনীন সুলতানা’র সভাপতিত্বে এতে শিক্ষার্থী-শিক্ষক, অভিভাবক ও সুধীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। এতে বৃক্ষ ও পাখি পরিচিতি, এদের সুরক্ষা ও প্রয়োজনীয়তা এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার বাস্তবতাসহ বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন শেরপুর বার্ড কনজারভেশন সোসাইটি, প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), আইইডি এবং জনউদ্যোগ কমিটির নেতৃবৃন্দ ।
শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন সমাজসেবী রাজিয়া সামাদ ডালিয়া, উন্নয়ন সংগঠক তারিক মিঠুল, শেরপুর বার্ড কনজারভেশন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ফকির শহীদুজ্জামান শহীদ, শেরপুর প্রকৃতি ও জীবন ক্লাবের উপদেষ্টা দেবদাস চন্দ বাবু, সাংবাদিক এম.এ হাকাম হীরা, আব্দুল মান্নান সোহেল, গারো নেত্রী কেয়া নকরেক প্রমুখ। উব্দুদ্ধকরণ সভা শেষে অরণি প্রগ্রেসিভ স্কুল প্রাঙ্গণ ও শিমুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ এবং প্রধান সড়কের পাশে শতাধিক ফলদ, বনজ ও ওষুধি গাছের চারা রোপণ করা হয়। তাছাড়া উপস্থিত দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর মাঝে বিভিন্ন ধরনের ফুল, ফল ও কাঠ গাছের চারা বিতরণ করা হয়।
পরিবেশ কর্মীরা বলেন, প্লাস্টিক দূষণের ভায়াবহতা সম্পর্কে সকলকেই সচেতন হতে হবে। এখন থেকেই এ বিষয়ে নিজেদেরকে তৈরী করতে হবে, যাতে ব্যক্তিগত, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো যায়। তাছাড়া বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বক্তারা বলেন, অভিযানে রোপিত গাছগুলো যখন বড় হবে, প্রকৃতিতে নির্মলতা ফিরে আসবে, এতে অক্সিজেনের যোগান বাড়বে এবং প্রকৃতিতে যে বিরূপ প্রভাব তা অনেকটা দূরীভুত হবে। গাছের ফল থেকে মানুষের পাশপাশি পাখিরাও খাবার পাবে। পাখির খাদ্যের জোগান হওয়ার ফলে নতুন নতুন পরাগায়ন হবে এবং গাছের সংখ্যাও বাড়বে। এতে পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষা পাবে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় আরো বেশী বেশী করে বৃক্ষরোপণের ওপর তাগিদ দিয়েছেন পরিবেশ কর্মীরা। কেবল বৃক্ষরোপণ করলেই হবে না, রোপিত গাছের পরিচর্যা ও সংরক্ষণের বিষয়েও সচেষ্ট থাকতে হবে। যাতে টেকসইভাবে গাছগুলো বেড়ে ওঠতে পারে।
জনউদ্যোগের এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহভাগী হিসেবে অংশগ্রহণ করেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর এনভারনমেন্ট অ্যান্ড ডেভলেপমেন্ট (আইইডি), শেরপুর বার্ড কনজারভেশন সোসাইটি (এসবিসিএস), শেরপুর জেলা প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব (পিওজেসি), পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)।
এফপি/রাজ