দেশে আবারও বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। দেশের উত্তরের তিস্তা ও ধরলা, পূর্বের সুরমা ও মনু, আর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের মুহুরী ও ফেনী নদীসহ বেশ কয়েকটি প্রধান নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, টানা ভারী বৃষ্টির কারণে দেশের অন্তত ১১টি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শুক্রবার (৩০ মে) ও শনিবার (৩১ মে) দেশের কয়েকটি নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এতে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা দেখা দিতে পারে।
বন্যার ঝুঁকিতে যেসব জেলা
বন্যার আশঙ্কাপূর্ণ জেলাগুলো হলো—ফেনী, সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও রংপুর। এসব জেলার নদ-নদীতে পানি বাড়ার প্রবণতা রয়েছে, বিশেষ করে পাহাড়ি ঢলের কারণে নদীগুলো হঠাৎ ফুলে উঠতে পারে।
কোথায় কী অবস্থা
চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, ফেনী ও গোমতী নদীতে পানি বাড়ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এতে ফেনী জেলার নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের নদীগুলোর মধ্যে সারিগোয়াইন, যাদুকাটা, মনু, খোয়াই, খলাই এবং সোমেশ্বরীর পানি বাড়ছে। আগামী তিনদিনের মধ্যে এসব নদীর পানি বিপদসীমা পার করতে পারে। ফলে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও নেত্রকোনায় বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে।
উত্তরাঞ্চলে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বেড়েই চলেছে। তিস্তা নদীর পানি সতর্কসীমা পার করে যেকোনো সময় বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে। কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা ও রংপুর জেলায় বন্যার প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
অন্য নদ-নদীর পরিস্থিতি
ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি বর্তমানে কমছে, তবে পরবর্তী চারদিনে আবার বাড়তে পারে। পদ্মা নদীর পানি ধীরে ধীরে বাড়ছে, আর গঙ্গা নদীর পানি এখনো স্থিতিশীল রয়েছে। উপকূলীয় এলাকাগুলোতেও স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি উচ্চতার জোয়ার দেখা দিতে পারে।
সতর্কতা ও প্রস্তুতি
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র জানিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে এবং প্রয়োজন হলে আরও সতর্কতা জারি করা হবে। স্থানীয় প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগকে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষদের সতর্ক থাকতে এবং প্রয়োজন হলে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এফপি/রাজ