মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার হরিন্দী গ্রামে এক হিন্দু পরিবারের সকল সদস্যকে চেতনানাশক প্রয়োগ করে পরিবারের লোকজনকে অজ্ঞান করে সর্বস্ব চুরির ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার লক্ষে একটি পক্ষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইদ্রিস আলী থানার গোলঘরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করেন এবং উক্ত ঘটনার বিষয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠের মাধ্যমে সাংবাদিকদের অবগত করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ওসি (তদন্ত) আবু বকর, শ্রীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ড. মুসাফির নজরুল, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মনোরঞ্জন সরকার, উপজেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক রথীন্দ্রনাথ রায়সহ শ্রীপুর প্রেস ক্লাবের অন্যান্য সাংবাদিকবৃন্দ।
প্রেস ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্যে অফিসার ইনচার্জ ইদ্রিস আলী জানান, শ্রীপুর থানাধীন হরিন্দী গ্রামের রায় কিশোর কুমার (মধু ঠাকুরের) ও রায় হিমাংশু শেখরের বসত বাড়িতে গত ২৭ মে মঙ্গলবার রাত ১০ টা হতে ২৮ মে বুধবার সকাল ৯ টার মধ্যে অজ্ঞাতনামা কে বা কারা চেতনাশক ঔষধ প্রয়োগ করে। রায় হিমাংশু শেখর, কিশোর কুমার রায় মধু ও তার স্ত্রী রায় নিপু চন্দনা খাওয়া-দাওয়া শেষে ৩০ থেকে ৪০ মিনিটের মধ্যে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
বুধবার (২৮ মে) সকাল অনুমানিক ৯ টার সময় মাঝিপাড়া থেকে জনৈক সুজিতের মা পূজার জন্য কিশোর কুমার রায় মধু ঠাকুরের বাড়িতে এসে ডাকতে থাকে। ডাকাডাকির একপর্যায়ে বাড়ির কোন লোকজনের সাড়া-শব্দ না পেয়ে স্থানীয় লোকজনদের বিষয়টি অবগত করেন।
পরে স্থানীয় লোকজন উক্ত বাড়িতে উপস্থিত হয়ে তিনজনকেই অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। ২৮ মে বুধবার বিকেল অনুমানিক তিনটা থেকে হাসপাতালে তাদের জ্ঞান ফিরতে শুরু করে। পরে মধু ঠাকুরের স্ত্রী তার ব্যবহৃত কানে থাকা স্বর্ণের দুল ও হাতের দুটি বালা পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান।
উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দেখতে পায়, উক্ত বাড়ির প্রধান ফটকে তালা লাগানো। এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে প্রকাশ্যে ও গোপনে তদন্তকালে জানা যায়, রায় হিমাংশু শিখর রাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক রনজিত ডাক্তার উক্ত বাড়িতে ২৭ মে মঙ্গলবার রাত অনুমানিক সাড়ে ৮ টার সময় উপস্থিত হয়ে তার পেশার মেপে ১৮০/১৫০ হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে চলে যায়। এখানে কোন প্রকার ধর্ষণ বা ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে ওই পরিবারের অপর সদস্য সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হিমাদ্রী শেখর রায়ও অপপ্রচার থেকে বিরত থাকতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বক্তব্যও দিয়েছেন। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যক্তি এটিকে ভিন্নখাতে নেওয়ায় জন্য অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তদন্তপূর্বক সকল বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এফপি/এমআই