Dhaka, Thursday | 4 September 2025
         
English Edition
   
Epaper | Thursday | 4 September 2025 | English
জয়পুরহাটে ট্রেনে কাটা পড়ে প্রাথমিক শিক্ষক নিহত
জাতির সেবায় আনসার-ভিডিপির ৬০ লাখ সদস্য সবসময় প্রস্তুত: মহাপরিচালক
বেবিচক চেয়ারম্যানের সাথে পাকিস্তান সিভিল এভিয়েশন অথরিটির মহাপরিচালকের সাক্ষাৎ
লোহাগাড়া দরবেশ হাট ডিসি সড়কের বেহাল দশা, জনদুর্ভোগ চরমে
শিরোনাম:

ঘুষের স্বর্গরাজ্য ডুমুরিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, দেখার কেউ নেই

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০:৪৯ এএম  (ভিজিটর : ৮২)

ডুমুরিয়ার  সাব-রেজিস্ট্রি অফিস যেন ঘুষের স্বর্গরাজ্য। যে কোনো বিষয়ে সামান্য ত্রটি-বিচ্যুতির অভিযোগ তুলেই ডুমুরিয়া উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গত কয়েক মাস ধরে জমি রেজিস্ট্রি আটকে দেওয়া হচ্ছে। তবে অফিস ম্যানেজ করলেই সবকিছু সচল হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে জমির দলিল করতে আসা দলিল লেখক, ক্রেতা-বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বহু বছর ধরে জমি (ভূমি) রেজিস্ট্রি করতে ‘অফিস খরচ-সহ বিভিন্ন নামে কিছু টাকা দেওয়ার রেওয়াজটি মেনেই এখানে দলিল রেজিস্ট্রির কাজ চলছিলো। কিন্তু গত ৩০ এপ্রিল-২০২৫ সাব-রেজিস্টার হিসাবে মো. নাহিদুজ্জামান ডুমুরিয়ায় যোগ দেওয়ার পর থেকেই সামান্য আইনি ত্রুটি বা নামের বানানে ভুল বের করেই ‘এ দলিল রেজিস্ট্রি  হবে না’ বলে আটকে দিচ্ছে। তখন সংশ্লিষ্ট দলিল লেখক তার কাজ উদ্ধারের জন্য সাব-রেজিস্টারের একান্তজন (নকল নবিস) তপন মন্ডলের সঙ্গে কথা শেষে ১০ হাজার থেকে লাখ টাকা দিতে পারলে সেই জমি রেজিস্ট্রি  হয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।

দলিল লেখকরা বলেন, আমরা বর্তমান বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে অনেক যাচাই-বাছাই করে একটা দলিল তৈরি করে সাব-রেজিস্টারের সামনে দাখিল করার পর তিনি খুঁজতে থাকেন, কোথাও কোনো ত্রুটি আছে কি-না। অনেক ক্ষেত্রে জমির পরচায় যে নাম লেখা থাকে, দাতার এন.আই.ডি কার্ডে কোনো না কোনো ভুল বের করেই বলেন, যাও এ দলিল হবে না। ভুল-সংশোধন করে নিয়ে এসো। কিন্তু নাম-সংশোধন তো মুখের কথা নয়। তাই ঝামেলা থেকে বাঁচতে তপনের মাধ্যমে সর্বনিম্ন ১০ হাজার থেকে শুরু করে সমস্যার গুরুত্বানুসারে ২০-৫০ থেকে লক্ষাধিক টাকা দিলেই রেজিস্ট্রি হচ্ছে।

এছাড়া তিনি নামপত্তন রেকর্ড থাকার পরও, বহু পূর্বের পিট দলিল, এস.এ খতিয়ানের অনলাইন চাইবে, মৌজার নাম ভুল থাকলে বা মৌজার জে.এল নম্বর নিয়ে আর.এস পরচায় এক-রকম তো এস.এ পরচায় অন্যরকম থাকলেই রেজিস্ট্রি আটকে দেবে। কোনো জমিতে বাড়ি উল্লেখ থাকলে সেই জমির আংশিক বিক্রি করতে গেলেই তিনি বলেন ৬% উৎস কর দিতে হবে। আর গুটুদিয়া ইউনিয়নের কোনো জমি (প্লট বিবেচনায়) হলেই বলেন ২% ভ্যাট দিতে হবে, তা-না হলে রেজিস্ট্রি বন্ধ। তাছাড়া যতো সমস্যাই বের হোক, তিনি বলেন, ‘তপনের সঙ্গে আলোচনা করো।’

এ প্রসঙ্গে ডুমুরিয়া দলিল লেখক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন খান বলেন, সর্বশেষ জরিপ (আর.এস) হয়ে যাওয়ার পরও তিনি নেটের এস.এ পরচা, মূল-দলিল, নামের ভুল পেলে, ১০-২০ হাজার টাকা দিলে দলিল ছাড়ে। এছাড়া লাখে (জমির মূল্য) ৩-৪’শ টাকা তো এমনিই নেয়। 

দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ফারুক খান বলেন, ডুমুরিয়ার ৭০ জন লেখকের কাছে আলাদা করে জিজ্ঞাসা করলে এই সাহেবের আসহনীয় দুর্নীতির কথা জানতে পারবেন। তিনি দলিলে কোনো না কোনো ভুল বের করে ২০-৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা চাচ্ছে। এক-কথায় ডুমুরিয়ার রেকর্ডে এমন দুর্নীতিগ্রস্ত অফিসার আগে আর আসেনি। খুলনা জেলা দলিল লেখক সমিতির সাবেক সভাপতি বাহাউদ্দিন খন্দকার বলেন, ডুমুরিয়ার সাব-রেজিস্টারের কাছে যে-কোনো দলিল নিয়ে গেলে তিনি যে-কোনো পন্থায় সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা নিবে।

ডুমুরিয়া উপজেলা সাব-রেজিস্টার মো. নাহিদুজ্জামান তার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এস.এ পরচা থেকে বর্তমান পর্যন্ত মালিকানার হিস্ট্রি যাচাই-বাছাই করেই দলিল করা আমার দায়িত্ব। কোনো কোনো সময় মানবিক সহয়তার করার ক্ষেত্রে কেউ কেউ ভুল বুঝতে পারে বা সুবিধা নিতে পারে। তবে আমার বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ যথার্থ নয়।

ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল-আমিন বলেন, জনস্বার্থ বিঘ্ন হচ্ছে এমন অভিযোগ পেলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেবো।

খুলনা জেলা রেজিস্টার মো. মিজানুর রহমান বলেন, দুর্ণীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।

এফপি/রাজ

সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝