ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের কাজী হেলাল উদ্দিনের নামে নিকাহ রেজিস্ট্রারের (কাজি) বিরুদ্ধে বাল্যবিয়ে নিবন্ধনসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন যাবত দাবি করে আসছে এলাকাবাসী।
সোনারামপুর ইউনিয়নের দুই যুবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করে বলেন, আমরা কাবিননামা তুলতে চাইলে একজনের কাছ থেকে ১১ হাজার ও অন্যজনের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা দাবি করেন কাজী হেলাল উদ্দিন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা তথা বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশী বাল্যবিয়ের শিকার হন সোনারামপুর ইউনিয়নের মেয়েরা। তারপর রয়েছে, উজানচর ও ছয়ফুল্লাকান্দি ইউনিয়ন।
অভিযোগ রয়েছে, বাল্যবিয়ের প্রায় প্রতিটি বিয়েতে সরকার নির্ধারিত মূল্যের ২/৩ গুন ফি আদায়, কাবিন নামা বাংলা থেকে ইংরেজি ভার্সন করায় গলা কাটা ফি আদায়,মেয়ে অপ্রাপ্ত হলে উপরের মহলকে খুশী করার কথা বলে আরো বাড়তি ফী আদায় করেন।
নিকাহ রেজিস্টার বই কয়েকটি জায়গায় বর ও কনের জন্মের তারিখ লিপিবদ্ধ করা হয় না। বইয়ের প্রায় ৬০ ভাগ জায়গায় বিবাহ পড়ানো ব্যক্তি, কনে ও কাজির সই থাকে না। কিছু জায়গায় সাক্ষীদের নাম থাকে কিন্তু সই নেই। আবার কিছু জায়গায় বর ও কনের সই ছাড়া সব কলাম ফাঁকা রাখা হয়। বেআইনি প্রক্রিয়ায় অবৈধভাবে অর্থ আদায়ের জন্য এসব অনিয়ম করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। পালিয়ে বিয়ে করা যুগলদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন মোটা অংকের টাকা।
সরেজমিনে শুক্রবার দুপুরে কয়েকজন স্থানীয় সংবাদকর্মী সোনারামপুর কাজীর অফিসে দেখা করতে গেলে দেখা যায় কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে একটি আলিশান অফিস নিজ নামে নির্মাণ করেছেন।
তিনি বলেন, আমি জীবনেও একটিও বাল্যবিয়ে পড়াইনি। বাল্যবিয়ের জন্য দায়ী ইমামরা। অপ্রাপ্তদের কালেমা পড়িয়ে বিয়ে দেয় ইমামরা, দোষ পড়ে আমার উপর। তিনি তার সম্পদ সম্পর্কে কিছু বলতে অস্বীকার করেন।
জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী নরসিংদী ও ঢাকায় তার বাড়ি রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে বিপুল পরিমান ব্যাংক ব্যালেন্স। নিজে বিয়ে করেছেন একাধিক।
এ প্রসঙ্গে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বলেন, সোনারামপুর ইউনিয়নের কাজী হেলাল উদ্দিন এর বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ শুনেছি, এবিষয়ে আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিবো।
এফপি/রাজ