বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সর্বদলীয় ঐকমত্য গঠনে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি, বিএনপি ডান, বাম ও ইসলামি ধারার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিচ্ছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে তা ইচ্ছাকৃত বিলম্ব হিসেবে বিবেচিত হবে। দলটি মনে করে, ডিসেম্বর মাসই নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত সময়, কারণ এ সময় আবহাওয়া অনুকূল থাকে এবং রমজান বা বর্ষাকালের মতো বড় বাধা থাকে না ।
বিএনপি ইতোমধ্যে যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেওয়া ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান ও লিয়াজোঁ কমিটির প্রধান নজরুল ইসলাম খান এই জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এছাড়া, রবিবার (২০ এপ্রিল) সিপিবি, বাসদসহ বাম ধারার দলগুলোর সঙ্গে চা-চক্রে মিলিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, দলটি ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী কিন্তু ২০২৪ সালের দ্বাদশ নির্বাচনে অংশ না নেওয়া দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনা করতে আগ্রহী।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আশ্বাস দিয়েছেন, ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে জুন ২০২৬ সালের মধ্যে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে । তবে, বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য চাপ দিচ্ছে, কারণ তারা মনে করে, বিলম্ব রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
ইসলামী আন্দোলন, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির মতো কিছু ইসলামি দল নির্বাচন নিয়ে দ্বিধান্বিত। তারা সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়া আগে সম্পন্ন করার দাবি জানাচ্ছে। তবে, জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের লন্ডন সফরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং ইসলামী আন্দোলনের নির্বাচনী প্রস্তুতি ইঙ্গিত দেয় যে, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বিএনপির সিনিয়র নেতারা মনে করেন, অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করলে সরকার দেশি-বিদেশি ‘ট্র্যাপে’ পড়তে পারে, যা জামায়াতের মতো দলের জন্য সুবিধাজনক হতে পারে। তারা মনে করেন, নির্বাচন নিয়ে অধৈর্য হলে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে।
বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আদায়ে সর্বদলীয় ঐকমত্য গঠনে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং আশা করছে, অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী কাজ করবে।
এফপি/রাজ