দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলে তীব্র ঠাণ্ডা ও গত তিন দিনের হিমশীতল শৈত্যপ্রবাহে কনকনে শীত বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে কনকনে শীত ও হিমেল বাতাসে কাহিল হয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিনই বাড়ছে ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রন্ত রোগীরা। এর মধ্য বৃদ্ধ ও শিশুরা ঠাণ্ডাজনিত শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশি, ডায়রিয়া, আমাশয়, নিউমোনিয়া সহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা। রোগে প্রতিনিয়তই আক্রন্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। দীনমজুর শ্রেনীর মানুষের দৈনন্দদিন কাজ হচ্ছে ব্যহত। যে কারনে জনজীবনে নেমে এসছে বিপর্যন্ত।
সরজমিনে শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) উপকূলীয় মোরেলগঞ্জ উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় গত তিন দিন ধরে শৈত্য প্রবাহ, কনকনে শীত ও ঘন কুয়াশায় সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রায় নেমে এসছে বিপর্যন্ত। প্রত্যান্ত গ্রামের মানুষ প্রচন্ড শীতের কারনে ঘর থেকে বের হতে পারছে না। যাতায়াতে দূরপাল্লার নৌ-পরিবহন সহ যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। ঘন কুয়াশার কারনে ফেরী চলাচল ২/৩ ঘন্টা বন্ধ থাকছে। শনিবার সকাল ১১ টার পরে সূর্যের আলো দেখা গেছে। শ্রমজীবী মানুষ দৈনন্দদিন কাজে দূরে কোথাও যেতে পারছে না। এদিকে প্রচন্ড ঠান্ডায় নদীর তীরবর্তী ছিন্নমূল মানুষের বসবাসে দূর্বিষহ জীবন যাপন করতে হচ্ছে। প্রতিনিয়ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রন্ত হয়ে রোগীর ভীর বাড়ছে। বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি।
শনিবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে ঠান্ডা জনিত রোগে বিশেষ করে ডায়রিয়া, জ্বর, শাষকষ্ট রোগে ১৩ জন রোগী ভর্তি রায়েছে। এর পূর্বে অনেক রোগী চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরে গেছেন। গত ৩ দিনে ভর্তিকৃত এরকম রোগীরা হলেন ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত আয়শা (৮)মাস, সুরাইয়া (১০)মাস, ইয়াসমিন (১১) মাস, জুলবার নাঈম (৮) মাস,সানাফ (১০) মাস, জ্বরে আক্রান্ত বৃদ্ধ আয়শা বেগম (৬৫), শিশু বায়জিদ (১১) মাস, রমজান (১০) মাস, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত আব্দুল্লাহ (২৯) দিন, বৃদ্ধ ছুরাতুন নেছা (৬০) শ্বাসকষ্ট রোগে আক্রন্ত, রোকেয়া বিবি (৫২) আঃ কুদ্দুস (৩০) এমিলি বেগম (৬২), সেতারা বেগম (৬০) ও ৪ বছরের শিশু বছর রুপাইয়া পাইয়া চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরছেন। প্রচন্ড শীতের কারনে পানগুছি নদীর তীরবর্তী পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড বারইখালী গ্রামের বৃদ্ধ শেফালী বেগম (৬৫) সহ একাধিক ছিন্নমূল পরিবারের মানুষের দূর্বিষহ জীবন যাপনকরতে হচ্ছে। কথা হয় বৃদ্ধা শেফালী বেগমের সাথে, তিনি বলেন ২৫ বছর পূর্বে এ ভিটায় স্বামী মারা গেছেন, ছোট ২টি ছেলে মেয়ে নিয়ে নদীর পাড়ে সে থেকেই বসবাস করছি। কুড়ে ঘরে যাদের জীবন তাদের আবার দুঃখ কিসের ঝড় বন্যা প্রতিবছরই পাড় করছি। গত ৩ দিন ধরে প্রচন্ড ঠান্ডা বাতাসে না ঘুমিয়ে রাত কাটাচ্ছি।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কামাল হোসেন মুফতি বলেন ঠান্ডা জনিত রোগ ডায়রিয়া নিউমোনিয়া জ্বর সর্দি কাশিতে আক্রন্ত হয়ে গত ৩ দিনে রোগীর সংখ্যা হাসপাতালে বেড়েছে, এখনো ১৩ জন চিকিৎাধীন রয়েছে। গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকজন রোগী চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়েছি। সে ক্ষেত্রে পরামর্শ হল ঠান্ডা নিউমোনিয়া প্রতিরোধের জন্য বিশেষ করে গরম কাপর পরিহিত, গরম খাবার ও বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে।
এফপি/জেএস