নীলফামারী-১ আসনে বিএনপি জোটের প্রার্থী হিসেবে জমিয়তের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীকে মনোনয়ন দেওয়ার পর থেকেই রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। ডোমারের বিএনপির নেতাকর্মীরা কোন ভাবেই জমিয়তের প্রার্থীকে মেনে নিতে পারছেন না। তাদের দাবী পুন:বিবেচনা করে খালেদা জিয়ার ভাগ্নে ইঞ্জিনিয়ার শাহরীন ইসলাম চৌধুরী তুহিনকে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে ঘোষনা দিতে হবে।
আফেন্দীর মনোনয়ন বাতিল করে তুহিনকে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দের দাবিতে বিক্ষোভ, মশাল মিছিল ও রাস্তায় শুয়ে আন্দোলন করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। একই সঙ্গে তারা খেজুর গাছ প্রতীকের প্রার্থীকে বয়কটের ঘোষণাও দেন।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধায় ডোমার উপজেলা বিএনপি কার্যালয় থেকে উপজেলা ও পৌর বিএনপির আয়োজনে থেকে জমিয়তের আফেন্দীর মনোনয়ন বাতিল করে তুহিনকে প্রার্থী ঘোষনার দাবীতে এক বিরাট মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মশাল মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পদক্ষিন করে রেলগেট মোড়ে প্রতিবাদ সভায় মিলিত হয়। প্রতিবাদ সভায় বিএনপি নেতারা জোটের প্রার্থী হিসেবে খেজুর গাছ প্রতিকের মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীকে বাদ দিয়ে ধানের শীষ প্রতিকের তুহিনকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবী জানান। তারা বলেন, ডোমার-ডিমলায় বিএনপির ব্যাপক ভোট ব্যাংক রয়েছে। তুহিনকে মনোনয়ন দেওয়া হলে বিএনপি এখানে বিপুল ভোটে জয়লাভ করতে পারবে। তাছাড়া খেজুর গাছের এখানে দশ হাজারও ভোট নাই এবং তাদের সংগঠনও শক্তিশালী নয়। জোটের আফেন্দী এখানে ভোট করলে নিশ্চিত আসনটি হাতছাড়া হয়ে যাবে। তাই বিএনপির প্রার্থী তুহিনকে এখানে মনোনয়ন দেওয়া হোক। উপজেলা বিএনপি ছাড়াও সন্ধায় পাঙ্গা মটুকপুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা বাবুর নেতৃত্বে এক বিরাট মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলে নেতাকর্মীরা আফেন্দীকে বাদ দিয়ে বিএনপির প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবী জানান। অপরদিকে বিকেলে ডোমার উপজেলার গোমনাতী বাজারেও বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা ইঞ্জিনিয়ার তুহিনকে মনোনয়ন না দিলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন। উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি রেয়াজুল ইসলাম কালুর সভাপতিত্বে এ সময় পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি আনিছুর রহমান আনু, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক আখতারুজ্জামান সুমন ও পৌর বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক মোজাফফর আলী বক্তব্য রাখেন। মশাল মিছিল শেষে বিক্ষোভকারীরা সড়কে শুয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।
স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, তৃণমূল পর্যায়ে ইঞ্জিনিয়ার তুহিনের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। তাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে প্রার্থী ঘোষণা করায় নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। তারা দাবি করেন, এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা না করা হলে আন্দোলন আরও জোরদার করা হবে।
উল্লেখ্য, গত (২৩ ডিসেম্বর) আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী-১ (ডোমার ও ডিমলা) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সমর্থিত জোট প্রার্থী হিসেবে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দির নাম ঘোষণা করা হয়। এর ফলে স্থানীয় বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
এফপি/জেএস