বান্দরবানের সীমান্তবর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় থাকা জাল টাকার একটি সংঘবদ্ধ চক্রের পর্দা ফাঁস করেছে পুলিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ জাল নোটসহ তিনজন পেশাদার জাল টাকা কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রহমান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১ ইস্ট ব্লকের বাসিন্দা হাবিব উল্লাহ (১৯), আলী জোহার (২৮) এবং কুতুপালং পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দা মো. আবুল হাশেম (৩২)। তাদের মধ্যে দুজন রোহিঙ্গা সহোদর ভাই এবং অপরজন পেশায় সিএনজি চালক।
পুলিশ জানায়, একটি সুসংগঠিত চক্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত অঞ্চলকে নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করে জাল নোট সংগ্রহ ও বাজারজাত করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) গভীর রাতে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ওয়াচ্ছাখালী এলাকার নূরুল ইসলামের দোকানের সামনে জাল টাকা হাতবদলের সময় পুলিশের বিশেষ অভিযানে তিনজনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানকালে পাচারকারী চক্রের কাছ থেকে ১১ লাখ ৩৮ হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল বাতেন মৃধা বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে জাল নোটসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রহমান বলেন, জাল নোটসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশ। এদের মধ্যে দুজন রোহিঙ্গা সহোদর ভাই এবং অপরজন সিএনজি চালক। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করে জাল টাকা দেশে নাকি বিদেশে ছাপানো হচ্ছে—সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা শুধু বাহক নয়, বরং জাল নোট সরবরাহ ও বিতরণের মূল চেইনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। সীমান্ত অঞ্চলকে নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করে তারা জাল টাকা বাজারে ছড়িয়ে দিচ্ছিল। এতে স্থানীয় বাজারে আতঙ্ক সৃষ্টি হয় এবং সাধারণ মানুষ প্রতারণার শিকার হচ্ছিল।
পুলিশ সুপার জানান, উদ্ধারকৃত জাল নোটের পরিমাণ একটি বড় ও সুসংগঠিত নেটওয়ার্কের ইঙ্গিত দেয়। যেকোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধে এবং জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলা পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।
এফপি/জেএস