রংপুরের তারাগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় ও তাঁর স্ত্রী সুবর্ণা রায় হত্যা মামলায় রহস্য উদঘাটন করে মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশ রংপুর। উক্ত ঘটনায় (১২ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন রংপুর জেলার পুলিশ সুপার মোঃ মারুফাত হুসাইন।
এ সময় তিনি বলেন, রংপুর জেলা পুলিশের একটি চৌকস টিম (১২ ডিসেম্বর) শুক্রবার ভোরে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তারাগঞ্জ থানার মামলায় তদন্তে প্রাপ্ত অভিযুক্ত মোঃ মোরসালিন ইসলাম (১৯), পিতা-মোঃ রুহুল আমিন, মাতা-মেরিনা বেগম, সাং-শেরমস্ত, থানা-তারাগঞ্জ, জেলা-রংপুর'কে তার নিজ বসতবাড়ী হতে গ্রেফতার করে।
আসামীর বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত তারাগঞ্জ সরকারি ডিগ্রী কলেজে স্নাতক শ্রেণিতে লেখাপড়া করার পাশাপাশি রাজমিস্ত্রি/টাইলস মিস্ত্রির সহকারী হিসাবে কাজ করে। গত (১ থেকে ৩ ডিসেম্বর) পর্যন্ত ডিসিস্ট যোগেশ চন্দ্র রায় (৮০) এর বাড়ীতে টাইল্স মিস্ত্রির সহকারী হিসাবে কাজ করে। কাজ করাকালে উক্ত আসামী জানতে পারে বাড়ীতে যোগেশ চন্দ্র ও তার স্ত্রী ছাড়া কেউ থাকেন না। তার বাসায় অনেক টাকা, স্বর্ণালঙ্কার থাকতে পারে। আসামী দরিদ্র এবং তার ব্যক্তিগত কিছু দেনা থাকায় সে তাদেরকে হত্যা করে নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার লুট করার পরিকল্পনা করে।
পুলিশ সুপার বলেন, পরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার দিন (৬ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে আসামী একটি ধারালো কুড়াল নিয়া ডিসিস্ট যোগেশ চন্দ্র রায় এর বাড়ীর পশ্চিম উঠে আঙ্গিনায় থাকা আমগাছ বেয়ে বাড়ীতে প্রবেশ করে প্রথমে ডিসিস্ট সুবর্ণা রানী (৭০) কে তাদের বসতবাড়ির রান্না ঘরে দেখতে পেয়ে কুড়াল দিয়া মাথায় উপর্যুপরি কোপ মারে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
এরপর ডিসিস্ট যোগেশ চন্দ্র রায়কে ডাইনিং রুমে চেয়ারে বসে থাকা অবস্থায় একই কুড়াল দিয়া মাথায় উপর্যুপরি কোপ মারিয়া মৃত্যু নিশ্চিত করে শয়ন ঘরের টেবিলের নিচে থাকা ধারালো ছোরা দ্বারা স্টিলের আলমারীর লক ভাঙ্গিয়া টাকা-পয়সা, সোনাদানা খোঁজ করে। কিন্তু কোন কিছু না পেয়ে ছোরাটি ঘরের মেঝেতে রাখে একই পথে বাড়ীর বাহির হয়ে বাড়ির পিছনে থাকা হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত কুড়ালটি জনৈক পরেশ চন্দ্র এর কুচুরীপানাযুক্ত পুকুরে ফেলে এবং ঘটনাস্থল হতে চলে যায়।
পরবর্তীতে জেলা পুলিশ, রংপুরের তারাগঞ্জ থানা সহ কয়েকটি ইউনিট একযোগে কাজ করে তথ্যপ্রযুক্তি ও সোর্সের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে উপরোক্ত তদন্তেপ্রাপ্ত আসামীকে সনাক্ত তাহার নিজ বসতবাড়ী হইতে গ্রেফতার করে। তার স্বীকারোক্তি ও দেখানো মতে ডিসিস্ট যোগেশ চন্দ্র রায় এর শয়ন কক্ষে স্টিলের আলমারীর লক ভাঙ্গার কাজে ব্যবহৃত ছোরাটি উদ্ধার করা হয় এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত কুড়ালের হাতলটি বর্ণিত পুকুরে কচুরীপানার ভিতর হইতে উদ্ধার করা হয়।
অতঃপর মামলার ঘটনা সংক্রান্তে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অভিযুক্তকে পুলিশ স্কটসহ বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়। মামলাটি তদন্তাধীন আছে। তদন্ত কার্যক্রম শেষে বিজ্ঞ আদালতে পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করা হবে।
এফপি/জেএস