বাউফল উপজেলায় সরকারের নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দামে সার বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে তরমুজসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করতে গিয়ে চাষীরা পড়েছেন বিপাকে। কৃষকদের অভিযোগ, স্থানীয়ভাবে সারের চাহিদা বেড়ে গেছে সরবরাহ কম, এমন দাবী তুলে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃষকদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করছেন।
সুত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১৫টি ইউনিয়নে সারের মোট ১৫জন প্রধান ডিলার ও ১০৫জন খুচরা ডিলার রয়েছে। প্রধান ডিলারদের কাছ থেকে খুচরা ডিলাররা সার কিনে নিয়ে কৃষকদের কাছে সরাসরি বিক্রি করেন। এ ছাড়াও প্রত্যেক প্রধান ডিলাররা নিজস্ব বিক্রয় কেন্দ্রে সরাসরি কৃষকদের কাছে বিক্রি করতে পারবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমান বাজারের বিএসপি (বায়ো সুপার ফসফেট) ড্যাপ ও টিএসপি (ত্রিপল সুপার ফসফেট)মরক্কো সারের সংকট বেশি। বিএসপি ড্যাপ সারের প্রতি বস্তা সরকারী নির্ধারিত মূল্য রয়েছে ১০৫০ টাকা ও টিএসপি (মরক্কো) সারের সরকারী নির্ধারিত মূল্য রয়েছে ১৩৫০টাকা। কিন্তু ডিলাররা এই সার দুটির সংকট দেখিয়ে বেশি দামে বিক্রি করছেন। একাধিক খুচরা ডিলাররা জানিয়েছেন, প্রধান ডিলারদের কাছ থেকে তারা বর্তমানে ১৫৫০ টাকায় বিএসপি ড্যাপ কিনে বিক্রি করছেন ১৫৮০ টাকায় আর টিএসপি (মরক্কো) ১৭০০ টাকায় কিনে বিক্রি করছেন ১৭২০ টাকায়।
কালাইয়া বন্দরের খুচরা ডিলার মো. হারুন রসিদ বলেন, বিএসপি ড্যাপ ও টিএসপি (মরক্কো) সারের সংকট বেশি। ডিলাররা আমাদের কাছে প্রতিবস্তা যে দামে রাখেন তার চেয়ে বস্তায় ২০ থেকে ৩০টাকা লাভে আমরা বিক্রি করি। কৃষকরা তাদের চাহিদা মতন সার না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করছেন। আবার কোন কোন কৃষক বাধ্য হয়ে বেশি দামে সার কিনে নিচ্ছেন।
উপজেলার চরকালাইয়া এলাকার কৃষক আলম হোসেন, আনোয়ার বলেন, প্রতি বছরই এই মৌসুমে সার নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়। সরকার দাম ঠিক করে দিলেও বাজারে তা মানা হয় না। অতিরিক্ত দামে সার কিনে উৎপাদন খরচ বাড়ছে, লাভ হচ্ছে কম।
কোটন গাজী নামে এ তরমুজ চাষি মমিনপুর চরে তরমুজ চাষ করার জন্য ৫০ একর জমি প্রস্তুত করেছেন। কিন্তু সারের দাম যে ভাবে বাড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে তাতে ৫০ একর জমিতে চাষাবাদ করা কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে।
স্থানীয় কৃষকেরা দ্রুত বাজার নিয়ন্ত্রণ ও ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। বেশি দামে সার বিক্রির অভিযোগ অস্বিকার করে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশন বাউফল উপজেলা শাখার সভাপতি মাসুদ রানা বলেন, উপজেলায় যে পরিমান সারের চাহিদা তার চেয়ে বরাদ্ধ কম। এই কারণেই সারের সমস্যা বেশি। তবে আশা করা হচ্ছে খুব শিগ্রই এই সমস্যা কেটে যাবে।
বাউফল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মিলন বলেন, এই উপজেলায় গত মৌসুমে তরমুজ চাষ হয়েছে ৪২০০ হেক্টর। চলতি মৌসুমে বেড়ে তা দাড়িয়েছে ৪৫০০ হেক্টর। সার বেশি দামে বিক্রি হওয়ার কোন অভিযোগ কৃষকদের কাছ থেকে আমি পাইনি। তবে যে কোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা প্রস্তুত। সরকারি নির্ধারিত দামের বেশি বিক্রি করলে ডিলারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এফপি/জেএস