ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা ছাত্রদলের অব্যাহতি প্রাপ্ত সদস্য সচিব অপু রায়হানের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা, জোরপূর্বক বিয়ে, অর্থ আত্মসাৎ, ভয়ভীতি প্রদর্শন, জমি দখল ও ফিশারি লুটসহ একাধিক গুরুতর অভিযোগ এনেছেন ডলি আক্তার নামে ভুক্তভোগী এক নারী।
রোববার (৩০ নভেম্বর) বিকালে ভালুকা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন তিনি।
ডলি আক্তার জানান, ২০২১ সালের শেষ দিকে ফেসবুকের মাধ্যমে অপু রায়হানের সঙ্গে পরিচয় হয়। বিয়ের প্রতিশ্রুতি ভিত্তিতে তাদের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। কিছুদিন পর অপু যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে তিনি আইনি ব্যবস্থার কথা জানান। পরে অপু তাকে ভালুকা থেকে গফরগাঁও নিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন বলে দাবি করেন তিনি।
তার অভিযোগ, বিয়ের সময় ১০ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য থাকলেও কৌশলে কাগজে কম দেখানো হয় এবং পরে নথিতে পরিবর্তন আনা হয়। বিয়ের আগে ও পরে বিভিন্ন অজুহাতে অপু তার কাছ থেকে ৭–৮ লাখ টাকা নেন।
ডলি আক্তার জানান, অতিরিক্ত অর্থ দাবি করায় বাধ্য হয়ে তিনি যৌতুক মামলা করেন। এরপর অপু তাকে ফোনে তালাক দেন এবং বিভিন্ন সময়ে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এমনকি ফেসবুকে অস্ত্র প্রদর্শন করে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগও করেন তিনি।
এছাড়া, ২৬টি মামলা, তবুও ধরাছোঁয়ার বাইরে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা, ভুক্তভোগী নারী সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, প্রতারণা, হামলা, যৌতুক মামলা, চাঁদাবাজি, জমি দখল, ফিশারির মাছ লুটসহ অপুর বিরুদ্ধে প্রায় ২৬টি মামলা ও ওয়ারেন্ট রয়েছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ত্রিশালের সাউথ কান্দায় ডাকাতির ঘটনায় জনতার হাতে আটক হলেও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তাকে ছাড়িয়ে আনা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ডলি আক্তার আরও বলেন, অপু রায়হান এলাকায় আরও বহু অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। এর মধ্যে রয়েছে—দৌলতপুর এলাকায় ওয়াকফ ফিশারির মাছ লুট, দুই ভাইয়ের জমি দখল করে গ্যারেজ নির্মাণ, সুরুজ মিয়ার জমি জোরপূর্বক দখল, রাজিব নামে এক যুবকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে বাধ্য করা হয়।
ডলি আক্তার অভিযোগ করেন, এসব বিষয়ে তিনি জেলা ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতাদের অবহিত করলেও তারা বিষয়টিকে 'পারিবারিক সমস্যা' উল্লেখ করে কোনো ব্যবস্থা নেননি। পরবর্তীতে যোগাযোগ মাধ্যম থেকেও তাকে ব্লক করে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী নারীর দাবী, তিনি এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, যেকোনো সময় অপু বা তার সহযোগীরা তাঁর ক্ষতি করতে পারে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন ওই নারী।
তবে এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে চাইলেও অভিযুক্তের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এফপি/অ