শরীরচর্চা মানেই যে অতিরিক্ত দৌড়াদৌড়ি করতে হবে বা জিমে গিয়ে ভারী ওজন তুলতে হবে, এমনটা না। এগুলোর কোনোটা না করেও তরতাজা থাকা যায়। শীতের দিনের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আলসেমি। সকাল সকাল বিছানা ছাড়তে মনই চায় না।
তার ওপরে একটু ঠাণ্ডা পড়তেই কাজকর্মে অনীহা দেখা দেয়, গা, হাত-পায়ে ব্যথাও ভোগায়।
যতই এনার্জি ড্রিঙ্ক খান না কেন, ভেতর থেকে শক্তি না জোগালে শরীর চাঙ্গা হবেই না। তার জন্য প্রয়োজন ব্যায়াম। তবে শরীরচর্চা বলতে অনেকেই ভাবেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ওজন তুলে বা ট্রেডমিলে ছুটে কসরত করতে হবে, তা কিন্তু না।
কার্ডিয়ো বা স্ট্রেংথ ট্রেনিংয়ের মতো ভারী ব্যায়াম করতে আপত্তি থাকলে, সহজ কিছু ব্যায়ামেই ভরসা রাখতে পারেন। তাতেও রোগপ্রতিরোধ শক্তি বাড়বে, শরীর চনমনে হয়ে উঠবে।
সাইড অ্যাবস
শুরুটা হোক এই ব্যায়াম দিয়ে। মাথার পেছনে দুই হাত রেখে লক করে নিন।
দুই পায়ের মধ্যে ফাঁক থাকবে। কাঁধ সোজা। এবার শরীরটা একবার ডান দিকে হেলান দিন, একবার বাঁ দিকে। এতে পিঠে ও কোমরে টান পড়বে। ১৬ গুনে ৩ বার করুন।
চেস্ট ওপেনার স্ট্রেচ
চেয়ারে সোজা হয়ে বসুন। কাঁধ সোজা রেখে দুই হাত পিঠের দিকে নিয়ে যান। এবার পিঠের দিকে একহাত দিয়ে অন্য হাত ধরুন। পিঠ টানটান রেখে দুই হাত যতটা সম্ভব পেছনের দিকে টানুন। বুক প্রশস্ত হবে, ওই অবস্থানে ২০-৩০ সেকেন্ড থাকুন। গভীরভাবে শ্বাস নিতে ও ছাড়তে হবে। ৩০ সেকেন্ড পরে আগের অবস্থানে ফিরে আসুন।
সাইড ক্রসিং
সাইড ক্রসিংয়ের সময়ে দুই পায়ের মধ্যে ফাঁক রেখে দাঁড়ান। হাঁটু ভাঁজ না করে নিচু হয়ে ডান হাত দিয়ে বাঁ পায়ের পাতা আর বাঁ হাত দিয়ে ডান পায়ের পাতা ছুঁতে হবে।
যোগাসন
স্ট্রেচিংয়ের পরে শরীর ‘ওয়ার্ম আপ’ হবে। সেই সময়ে সহজ কিছু যোগাসনও করে নিন, যা দিনভর শরীর তরতাজা রাখবে। কাজে উৎসাহও পাবেন, মনঃসংযোগও বাড়বে।
শলভাসন
উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। এরপর থুতনি মাটিতে স্পর্শ করুন। পা দুটি টানটান করে গোড়ালি দুটিকে স্পর্শ করান। এবার প্রথমে বাঁ পা সোজা করে সামান্য ওপরের দিকে তুলে পাঁচ অবধি গুনুন এবং নামিয়ে নিন। একইভাবে ডান পা-টি ওপরের দিকে তুলে নামিয়ে আনুন। এবার দুটি পা একসঙ্গে ওপরের দিকে তুলুন। দশ অবধি গুনে পা দুটি নিচে নামিয়ে আনুন। পর পর তিনবার আসনটি করুন।
অধোমুখ শবাসন
অধোমুখ শবাসনকে বলা হয় ‘ডাউনওয়ার্ড-ফেসিং ডগ পোজ’। নিয়মিত এই আসন অভ্যাসে পেশির জোর বাড়বে এবং অতিরিক্ত ক্লান্তি ভাব দূর হবে। প্রথমে হাত ও হাঁটুতে ভর করে হামাগুড়ি দেওয়ার মতো ভঙ্গি করুন।
হাতের তালু মাটিতে থাকবে, পিঠ ওপরের দিকে তুলতে হবে, পায়ের পাতা মাটি স্পর্শ করে থাকবে। দেখতে লাগবে অনেকটা ইংরেজি ‘ভি’ অক্ষরের মতো। মাথা যতটা সম্ভব মাটির দিকে ঝুঁকিয়ে গভীরভাবে শ্বাস টানতে ও ছাড়তে হবে। এই ভঙ্গিমায় ২০ সেকেন্ড থেকে আবার আগের অবস্থানে ফিরে আসতে হবে।
এফপি/অ