শীতকালে গা-হাত-পা চুলকানো খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। তবে কি কারণে এই সমস্যা বাড়ে তা জানা থাকলে সহজেই এই অস্বস্তি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যায়।এ সময়ে এই শুষ্ক বাতাস ত্বক থেকে দ্রুত জলীয় অংশ শুষে নেয়। এর ফলে ত্বক স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে যায়। ত্বকের বাইরের সুরক্ষার স্তর দুর্বল হয়ে পড়ে। এর ফলে ত্বক ফাটা বা চুলকানির মতো সমস্যা দেখা দেয়।
যেসব কারণে চুলকানির সমস্যা বাড়ে
১. শীতে অনেকেরই গরম পানিতে গোসল করার অভ্যাস আছে। গরম পানি সাময়িকভাবে আরাম দিলেও ত্বকের প্রাকৃতিক তেল ধুয়ে দেয়। এ কারণে ত্বক আরও বেশি শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়, যা চুলকানির অন্যতম কারণ।
২.উলের বা কিছু সিনথেটিক পোশাকের তন্তু খুব রুক্ষ হয়। যা সংবেদনশীল ত্বকে ঘষা বা ইরিটেশন সৃষ্টি করে। এর ফলেও চুলকানি হতে পারে। অতিরিক্ত গরম পোশাক পরার ফলে শরীরের যে ঘাম হয়, তা থেকেও অ্যালার্জি বা চুলকানি বেড়ে যেতে পারে।
৩. শীতের শুষ্কতায় একজিমা বা সোরিয়াসিসের মতো চর্মরোগগুলি বেড়ে যায়। এছাড়াও, শীতকালে ঠান্ডা আবহাওয়ায় খোসপাঁচড়ার মতো ছোঁয়াচে রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়।
চুলকানি থেকে মুক্তি পেতে কী করবেন
এই অস্বস্তিকর সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে লাইফস্টাইলে কিছু ছোট ছোট পরিবর্তন আনুন। যেমন-
আর্দ্রতা বজায় রাখুন
গোসলের পর ত্বক সামান্য ভেজা থাকতেই ঘন, তেল-ভিত্তিক ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম, অয়েনমেন্ট বা লোশন ব্যবহার করুন। গ্লিসারিন, শিয়া বাটার বা পেট্রোলিয়ামযুক্ত ক্রিম ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। ত্বক যখনই শুষ্ক মনে হবে, তখনই ময়শ্চারাইজার লাগান।
গোসলের অভ্যাসে পরিবর্তন
হালকা গরম পানি ব্যবহার: অতিরিক্ত গরম পানির পরিবর্তে হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন। খুব বেশিক্ষণ না করে গোসলের সময় ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে সীমিত রাখুন। মৃদু, সুপার-ফ্যাটেড এবং সুগন্ধি-মুক্ত সাবান ব্যবহার করুন।
পোশাকের ব্যাপারে সতর্কতা
সরাসরি উলের পোশাক না পরে তার নিচে সুতির নরম পোশাক পরুন। অতিরিক্ত গরম এড়াতে স্তরে স্তরে পোশাক পরুন। শীতকালেও প্রচুর পরিমাণে তরল বা পানি পান করে শরীরকে ভিতর থেকে আর্দ্র রাখুন। বাইরে বের হওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট আগে এসপিএফ ১৫-৩০ যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। তা না হলে ত্বক রুক্ষ হয়ে যেতে পারে।
জরুরি উপশম
চুলকানি খুব বেশি হলে আক্রান্ত স্থানে ৫-১০ মিনিটের জন্য একটি ঠান্ডা, ভেজা তোয়ালে বা বরফের প্যাক প্রয়োগ করতে পারেন।
চুলকানির সমস্যা বাড়তে থাকলে দেরি না করে অবশ্যই একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
এফপি/জেএস