শীতকাল এলে অনেকেরই বাতের ব্যথা বেড়ে যায়। ক্লান্তি, আলস্য ও শরীরের জড়তা তখন স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি অনুভূত হয়। বিশেষ করে যারা দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে বা বসে কাজ করেন, তাদের পায়ের পাতায় ও গোড়ালিতে ব্যথা বাড়ে। সকালে ঘুম থেকে উঠে মাটিতে পা রাখলেই গোড়ালিতে তীব্র ব্যথা শুরু হয়, হাঁটলে টান ধরে যায়।
হাত, কাঁধসহ শরীরের বিভিন্ন অংশেও ব্যথা দেখা দেয়। এই সমস্যায় নিয়মিত ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন নেই। বরং দৈনন্দিন খাবারেই পাওয়া যেতে পারে উপশম।
অস্থিসন্ধি বা হাড়ের সংযোগস্থলে সাদা রঙের এক ধরনের স্থিতিস্থাপক তন্তু থাকে, যাকে কার্টিলেজ বলা হয়।
এটি হাড়ের মধ্যে ঘর্ষণ কমায় এবং আঘাত লাগলে শক অ্যাবজরবারের মতো কাজ করে। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কার্টিলেজ ক্ষয়ে যেতে শুরু করে, ফলে হাড়ে ঘর্ষণ বাড়ে এবং বাতের ব্যথা দেখা দেয়। এ অবস্থায় এমন কিছু খাবার খাওয়া জরুরি, যা হাড়ের ক্ষয় রোধ করে এবং শরীরের ভিটামিন ও খনিজের ভারসাম্য ঠিক রাখে। চলুন, জেনে নিই বাতের ব্যথা কমাতে যেসব খাবার উপকারী।
সয়া প্রোটিন
সয়া প্রোটিন হাড় ও সন্ধির জন্য খুব উপকারী। সপ্তাহে এক দিন খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন। তবে প্রতিদিন বেশি পরিমাণে না খাওয়াই ভালো। এক কাপ সয়াবিনে থাকে প্রায় ৮.৫ গ্রাম প্রোটিন, আর আধা কাপ টোফুতে পাওয়া যায় ১০ গ্রাম প্রোটিন।
আখরোট
আখরোটে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, যা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
এটি রিউমাটয়েড বা অস্টিওআর্থ্রাইটিস। যেকোনো ধরনের বাতের ব্যথা উপশমে কার্যকর। এ ছাড়া এটি হৃদরোগ প্রতিরোধ ও মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতেও উপকারী।
ওটস
ওটস স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের নিয়মিত খাবারে থাকা উচিত। এটি শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট শরীরে প্রদাহ কমায়। নিরামিষভোজীদের জন্য ওটস প্রোটিনেরও একটি ভালো উৎস।
গ্রিন টি
ওজন কমানোর পাশাপাশি গ্রিন টি বাতের ব্যথা কমাতেও কার্যকর। এতে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান শরীরের প্রদাহ কমায় এবং ব্যথা উপশমে সাহায্য করে।
ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার
আর্থ্রাইটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভিটামিন সি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সাইট্রাস জাতীয় ফল (কমলা, লেবু), স্ট্রবেরি, চেরি, বেল পেপার ও ফুলকপিজাতীয় খাবার নিয়মিত খেতে পারেন।
শীতে শরীর গরম রাখা, হালকা ব্যায়াম করা এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চললেই বাতের ব্যথা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
এফপি/অ