Dhaka, Tuesday | 18 November 2025
         
English Edition
   
Epaper | Tuesday | 18 November 2025 | English
হাসিনা-কামালের বিচারে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের মানদণ্ড পূরণ হয়নি
এবারের নির্বাচন দেশ রক্ষার: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকার আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে
হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ে গণ সিজদাহ্
শিরোনাম:

পেকুয়ায় শিক্ষক সংকটে প্রাথমিক বিদ্যালয়

প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫, ১:৫০ পিএম  (ভিজিটর : ৬)

কক্সবাজারের পেকুয়ায় প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা সংকটের মুখে পড়েছে। উপজেলার এক-তৃতীয়াংশের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয়েই প্রধান শিক্ষক নেই। দীর্ঘ সময় ধরে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকদের দিয়ে এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এর ফলে বিদ্যালয় পরিচালনায় প্রশাসনিক জটিলতা এবং প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলার অভাব দেখা দিয়েছে। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে শিক্ষার্থীদের আচার-আচরণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে এবং মানসম্মত পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষকের সংখ্যা কমে যাচ্ছে, যার ফলে শিশু শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশ সংকুচিত হচ্ছে।

পেকুয়া উপজেলায় মোট ৫৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে, যার মধ্যে ২২টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। ভুক্তভোগীরা বলছেন, মামলা, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে প্রশাসনিক জটিলতা, নিয়োগ পরীক্ষায় দেরি, পদোন্নতিতে ধীরগতিসহ বহুবিধ কারণে এই সংকট দীর্ঘায়িত হচ্ছে। প্রধান শিক্ষকরা শ্রেণি পাঠদান পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধান, শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ এবং মডেল শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। তাই এই সংকট নিরসনে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০% সরাসরি নিয়োগ এবং ৮০% পদোন্নতির বিধান রয়েছে। সহকারী শিক্ষকের ৩৪১টি পদের মধ্যে ৩২৪ জন কর্মরত আছেন এবং ১৭টি পদ শূন্য। ৯ জন পদোন্নতির তালিকায় আছেন, যা কার্যকর হলে সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য হবে ২৬টি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, পেকুয়া উপজেলার ২২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের সংকট রয়েছে। উপজেলার ৫৬টি বিদ্যালয়ে বিভিন্ন জটিলতার কারণে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ আটকে আছে। দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ ও পদোন্নতি কার্যক্রম বন্ধ। এসব বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত ও চলতি দায়িত্বে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের প্রশাসনিক ক্ষমতা সীমিত থাকায় শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। পেকুয়া উপজেলায় প্রধান শিক্ষক সংকট সবচেয়ে বেশি।

পূর্ব উজানটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, একটি আদর্শ এবং নীতি-নৈতিকতা বোধসম্পন্ন জাতি গঠনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক শিক্ষা। কিন্তু দীর্ঘ সময় প্রধান শিক্ষক না থাকার কারণে সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক পাঠদানে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে শিক্ষার প্রথম ধাপটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং প্রশাসনিক জটিলতাও দেখা দিয়েছে।

রাজাখালী নতুনঘোনা হাজী শের আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কামরুল হাসান জয়নাল বলেন, প্রধান শিক্ষক না থাকায় সহকারী শিক্ষক হয়েও আমাকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এর ফলে শিক্ষক সংকট দেখা দিয়েছে এবং খুব কষ্ট করে ক্লাস সামলাতে হচ্ছে। আমাদের ক্ষমতা সীমিত হওয়ায় অনেক জটিলতার মধ্যে পড়তে হচ্ছে এবং অনেক বিষয়েই সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। ফলে বিদ্যালয়ের পরিবেশ, শৃঙ্খলা, শিক্ষার্থীদের আচরণ—সবকিছুতেই নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

প্রধান শিক্ষক সংকট নিয়ে অভিভাবকরাও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের নতুন ঘোনা এলাকার বাসিন্দা গিয়াসউদ্দিন বলেন, আমার মেয়ে রাজাখালী নতুন ঘোনা হাজী শের আলী সিকদার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। আমি স্বল্পশিক্ষিত মানুষ। আমার প্রত্যাশা, মেয়ে উচ্চশিক্ষিত হয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখবে। কিন্তু স্কুলে প্রধান শিক্ষক নেই, ফলে পড়াশোনাও নেই। এ অবস্থায় আমরা অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন।

পেকুয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বাবুল আক্তার বলেন, পেকুয়া উপজেলার ২২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের অভাবে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়গুলোতে প্রশাসনিক সংকট দেখা দিচ্ছে। এই বিদ্যালয়গুলোতে দ্রুত প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য উপরস্থ কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করা হবে।

এফপি/অ
সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝