শিরোনাম: |
ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে আওয়ামীলীগ নেতার মালিকানাধীন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তমা কন্সট্রাকশন লিমিটেড উন্নয়ন কাজে কাঁচামাল সরবরাহকারীদের আর্থিক দেনা পরিশোধ করতে না পারায় প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ম্যানেজার (পিএম) উদয়ন চক্রবর্ত্তীসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে।
প্রতিষ্ঠানের আর্থিক টানাপোড়েনের কারণে তাদের প্রাপ্ত করিডোর সড়কের কাজ তুরস্কের একটি কোম্পানীর কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে আরো কয়েকজন কর্মকর্তাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। এদিকে, কাঁচামাল সরবরাহকারীদের টাকা পরিশোধ করা হবে মর্মে সড়কের কাজে নিয়োজিত একজন উর্ধতন সরকারি কর্মকর্তা প্রতিশ্রæতি দিলে প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটকের তালা খুলে নেন সরবরাহকারীরা। তাছাড়া মহাসড়কের গোয়ালাবাজার এর ভিতরে অংশে খানা খন্দের সংস্কার কাজ এখনো শুরু হয়নি।
জানা যায়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা বকেয়া আদায়ের দাবীতে সরবরাহকারী এ আর এন্টারপ্রাইজ এর লোকজন ঊনিশমাইল নামক স্থানে তমা কন্সট্রাকশন লিমিটেডের কার্যালয় কাম ইয়ার্ড এর প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। এরপর বার বার তারিখ করার পর পাওনাদারদের দেনা পরিশোধ করতে না পেরে প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ম্যানেজারের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন উদয়ন চক্রবর্ত্তী। তার সাথে আরো কয়েকজন অব্যাহতি নেন এবং কয়েকজনকে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ অপসারন করে। অন্যদিকে ২০২৪ সালের পাতানো ডামি নির্বাচনে নোয়াখালী-২ (সেনবাগ- সোনাইমুড়ী) আসন থেকে অংশগ্রহণকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক ও তার ছেলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুকিদুর রহমান ভূঁইয়া রাকিব স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর কানাডায় পালিয়ে যান। তাদের অনুপস্থিতিতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আর্থিক টানাপোড়নে পড়লে বর্তমানে করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের এ কাজটি তুরস্কের একটি কোম্পানীকে দেওয়া হবে বলে কথাবার্তা চলছে। আগামি ২০ অক্টোবর এ লক্ষ্যে একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
সড়কে কাঁচামাল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক এমরান মিয়া বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তমা কন্সট্রাকশনের কাছে আমাদের প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা পাওনা রয়েছে। আমরা পাওনা টাকার জন্য তাদের প্রতিষ্ঠানের ফটকে তালা দিয়েছিলাম। সরকারি কর্মকর্তা দেবাশীষ রায় দুই কিস্তিতে টাকা পরিশোধের আশ্বাস দিলে আমরা ফটকের তালা খুলে দিয়েছি।
তমা কন্সট্রাকশনের প্রকল্প ম্যানেজার উদয়ন চক্রবর্ত্তী বলেন, বার বার তারিখ দিয়ে সরবরাহকারীদের সাথে ওয়াদা ঠিক রাখতে পারিনি তাই ৭ অক্টোবর আমি প্রতিষ্ঠানে অব্যাহতিপত্র জমা দিয়েছি। এটা আমার ৩০ বছরের অধিক চাকুরি জীবনের জন্য অত্যন্ত দুঃখের বিষয়।
সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের সিলেট অংশের প্রজেক্ট ম্যানেজার দেবাশীষ রায় বলেন, বাস্তব কিছু সমস্যা আছে তবে এটি নিরসনের লক্ষ্যে কাজ চলছে। সরবরাহকারীদের পাওনা টাকা পরিশোধ করা হবে। গোয়ালাবাজারের ভেতরের খানা খন্দ সংস্কারের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, কাজ শুরু হবে।
উল্লেখ্য, ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে শেরপুর টোলপ্লাজা নামক স্থান থেকে কাশিকাপন বাজার পর্যন্ত দীর্ঘ ১৪.১ কিলোমিটার সড়কের কাজ পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তমা কন্সট্রাকশন লিমিটেড। ৪বছর মেয়াদে ৮শ ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজ সম্পন্ন এবং ৬ বছর মেয়াদে ৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে রক্ষণাবেক্ষণের এই কাজ পায় প্রতিষ্ঠানটি। ২০২৩ সালের ১ মার্চ থেকে শুরু করা কাজ নিয়মমাফিক চললে ২০২৭ সালে শেষ হওয়ার কথা।
এফপি/অআ