শিরোনাম: |
‘বিউটি পার্লারে চাকরি’ এই প্রলোভনেই ভারতে এসেছিল দুই তরুণী, কিন্তু শেষমেশ তাদের গন্তব্য হয় দেহব্যবসার অন্ধকার ঘর। পুনের পুলিশি তৎপরতায় শেষ পর্যন্ত মুক্তি পেল দুজন বাংলাদেশি তরুণী, যাদের বয়স মাত্র ২২ ও ২০।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে যখন কাত্রজ এলাকার এক তরুণী নিজেই ফোন করে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে সাহায্য চায়। দ্রুত অভিযানে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে, এবং সেই সূত্র ধরে আম্বেগাঁও-পাঠার এলাকার এক ফ্ল্যাটে গিয়ে দ্বিতীয় তরুণীকে পায়।
এ ঘটনার সূত্রে ধরা পড়ে রজু পাটিল, ধনকাওয়াদি এলাকার বাসিন্দা। আদালত তাকে তিন দিনের হেফাজতে পাঠিয়েছে, আর পুলিশ খুঁজছে তার স্ত্রীকেও, যিনি পাচারচক্রের সঙ্গে যুক্ত বলে সন্দেহ।
এই মামলা নথিবদ্ধ হয়েছে ভারতী বিদ্যাপীঠ থানায়। উদ্ধার অভিযানে নেতৃত্ব দেন সহকারী পুলিশ ইন্সপেক্টর স্বপনিল পাটিল ও সিনিয়র ইন্সপেক্টর রাহুলকুমার খিলারে—তাদের দ্রুত পদক্ষেপেই দুজন তরুণী নিরাপদে ফিরতে পেরেছে।
পুলিশের ধারণা, এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; গত কয়েক মাসে পুনে শহরের বুধওয়ার পেথ, কাত্রজ, আম্বেগাঁও প্রভৃতি এলাকায় একই ধরনের নেটওয়ার্ক সক্রিয় রয়েছে। সীমান্ত পারাপারে অননুমোদিত এজেন্ট, ভুয়া নথি ও স্থানীয় হোস্টদের মাধ্যমে গড়ে উঠেছে এক আন্তঃদেশীয় পাচারচক্র।
প্রশাসন জানিয়েছে, উদ্ধারকৃত তরুণীদের মেডিক্যাল পরীক্ষা, মানসিক সহায়তা ও পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়েছে। এনজিও এবং সামাজিক সেবা দফতর একযোগে তাদের আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করছে।
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, এটি শুধু অপরাধ নয়—এটি মানবিক সংকট। চাকরির আশায় সীমান্ত পেরনো যুবতীরা যেন প্রতারণার শিকার না হয়, তার জন্য সীমান্তনিগরানি, অনলাইন বিজ্ঞাপনের যাচাই ও স্থানীয় মালিকদের দায়িত্ববোধ—সবদিকেই নজর বাড়ানো জরুরি।
শেষ পর্যন্ত, এই ঘটনাটি মনে করিয়ে দিল—একটি ফোন কখনও জীবন বাঁচাতে পারে, কিন্তু এমন দুঃস্বপ্ন রোধে দরকার সমাজের সামগ্রিক সজাগতা, প্রশাসনের সমন্বিত পদক্ষেপ, আর প্রতিবেশী দেশের সহযোগিতা।
এফপি/অআ