| শিরোনাম: |

স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও বিদ্যুৎতের সুবিধা থেকে বঞ্চিত বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব বাইশারী যৌথ খামার পাড়া এলাকা। এই এলাকায় কয়েক হাজার লোকের বসবাস । প্রায় ৫শত পরিবার নিয়ে এই এলাকাটি। সরকার শতভাগ বিদ্যুৎতের কথা জানালেও দীর্ঘ চার বছর ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই এই এলাকায়। অথচ প্রায় তিন বছর আগে ওই এলাকার অন্তত বিশ জন গ্রাহক পল্লীবিদ্যুৎ অফিস থেকে মিটার সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেই সংযোগ কার্যকর হয়নি। রবিবার (৫ অক্টোবর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়— গ্রাম জুড়ে বিদ্যুতের খুঁটি রয়েছে, মিটারও ঘরে ঝুলছে, কিন্তু বিদ্যুতের তারে আলো জ্বলছেনা।
গ্রাহকরা জানান, বিদ্যুৎঅফিসে বারবার যোগাযোগ করেও কোনো ফল পাচ্ছেন না। এক কর্মকর্তা বলেন, “ট্রান্সফরমার নেই”,আরেক জন বলছেন, “বন বিভাগের লিখিত অনুমতি লাগবে।” এই জটিলতার মধ্যে বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও আলো জ্বলে ওঠেনি তাদের ঘরে।
ভুক্তভোগী গ্রাহক মো. আবদুল কাদের বলেন,তিন বছর হলো মিটার নিয়েছি, কিন্তু সংযোগ এখনো পাইনি। প্রতি বার বলছে ট্রান্সফরমার নাই।
মো.সুলতান আহমদ বলেন,বিদ্যুৎ অফিসে গেলে বলে বন বিভাগের অনুমতি লাগবে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রত্যয়ন দিয়েছেন, তাও কাজ হচ্ছে না।
আব্দু শুক্কুর বলেন,বন বিভাগে গেলে তারা আবার বলে বিদ্যুৎ অফিস থেকে লিখিত আনেন। আমরা এভাবে ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত। মো. আব্দুল্লাহ বলেন,বিদ্যুৎ অফিস, বন বিভাগ, ইউনিয়ন পরিষদ— তিন জায়গায় বারবার ঘুরেও কাজ হচ্ছে না। মো. আবুল কাশেম জানান,আমাদের জায়গা ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। তবুও বন বিভাগের প্রত্যয়ন চাওয়া হচ্ছে। এটা হয়রানি ছাড়া কিছু না।
ছফুরা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,বাচ্চারা পড়াশোনা করতে পারেনা। রাতে মোমবাতির আলোয় জীবন কাটে।
এবিষয়ে, বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.আলম (কোম্পানি) এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন,আমি প্রত্যয়ন দিয়েছি যে এটি বন বিভাগের জায়গা নয়। তবুও বিদ্যুৎ অফিস আবার বনবিভাগের লিখিত চাচ্ছে যা অযৌক্তিক।
বনবিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা নূর হোসেনের সাথে একাধিক বার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি ফলে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায় নি।তবে তার সাথে গ্রাহক গণ প্রত্যয়নের জন্য যোগাযোগ করলে তিনি জানান, “আমার দায়িত্ব দুই জায়গায়। উত্তর বাইশারী যৌথ খামারপাড়া বন বিভাগের জায়গা নয়— এমন প্রত্যয়ন দিতে পারি, তবে বিদ্যুৎ অফিস থেকে লিখিত আবেদন আনতে হবে।”
বিদ্যুৎ অফিসের অনুমোদিত ইলেকট্রিশিয়ান মো. বেলাল বলেন,জি এম স্যারকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে জানিয়েছি। ট্রান্সফরমার এলেই সংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে।”
ইঞ্জিনিয়ার মো.জুবায়ের এ প্রতিবেদককে বলেন, বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। ট্রান্সফরমার না থাকায় কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।
এ জি এম আলমগীর কবির এ প্রতিবেদককে বলেন,বনবিভাগের একটি প্রত্যয়ন প্রয়োজন। ট্রান্সফরমারও এখনো অফিসে নেই। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।
ঈদগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জি এম রাজন পাল বলেন, আমি বর্তমানে ছুটিতে আছি। অফিসে ফিরে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।দীর্ঘ ভোগান্তিতে থাকা পূর্ব বাইশারী যৌথ খামারপাড়ার মানুষ এখন শুধু একটাই দাবি করছেন—“আর নয় অজুহাত, এবার ঘরে আলো জ্বলুক।”
এফপি/অআ