এস্তোনিয়ার আকাশসীমায় রুশ যুদ্ধবিমানের অনুপ্রবেশকে কেন্দ্র করে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বৈঠকটি নিউইয়র্ক স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
এস্তোনিয়ার অনুরোধেই বৈঠকটি ডাকা হয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারগুস চাহকনা বলেছেন, রাশিয়ার এই পদক্ষেপ শুধু এস্তোনিয়ার জন্য নয়, বরং সকল জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্যও হুমকি। তিনি আরও বলেন, “নিরাপত্তা পরিষদের একজন স্থায়ী সদস্য যখন এমন নীতি লঙ্ঘন করে, তখন বিষয়টি অবশ্যই পরিষদের মাধ্যমেই সমাধান করতে হবে।”
গত শুক্রবার তিনটি রুশ মিগ–৩১ যুদ্ধবিমান ফিনল্যান্ড উপসাগরের আকাশপথ হয়ে অনুমতি ছাড়াই এস্তোনিয়ার আকাশসীমায় প্রবেশ করে। এস্তোনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমানগুলো কোনো ফ্লাইট পরিকল্পনা জমা দেয়নি, ট্রান্সপমিটার বন্ধ ছিল এবং আকাশ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কোনো যোগাযোগ করেনি। প্রায় ১২ মিনিট এস্তোনিয়ার আকাশে থেকে পরে ন্যাটো সদস্য ইতালির মোতায়েন করা এফ–৩৫ যুদ্ধবিমান তাদের বাধা দেয়।
এস্তোনিয়ার কূটনৈতিক সূত্র জানায়, ঘটনাটি ন্যাটো চুক্তির ধারা–৪ অনুযায়ী আলোচনার জন্যও তোলা হয়েছে। এই ধারা অনুসারে কোনো সদস্য রাষ্ট্র তার নিরাপত্তা বা সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়েছে বলে মনে করলে ন্যাটোকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে পারে। এ সপ্তাহেই ব্রাসেলসে এই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তাদের বিমান নিরপেক্ষ আকাশে উড়ছিল এবং আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন মেনেই কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।
ফিনল্যান্ড ও পোল্যান্ড ঘটনাটির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। ফিনল্যান্ড বলেছে, এ ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড ইউরোপের নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে। গত সপ্তাহে রুশ ড্রোন ও যুদ্ধবিমান পোল্যান্ডের আকাশসীমায় প্রবেশ করার পর পোল্যান্ডও ন্যাটোর কাছে অনুরূপ বৈঠকের আবেদন জানিয়েছিল।
ইউক্রেনও নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে উপস্থিত হয়ে তাদের অবস্থান তুলে ধরতে চেয়েছে। এর জন্য দেশটি দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানিয়েছে, যারা বর্তমানে নিরাপত্তা পরিষদের ঘূর্ণায়মান সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে।
ইউক্রেনের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা বলেছেন, “৩৪ বছরের মধ্যে প্রথমবার এস্তোনিয়া জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কাছে জরুরি বৈঠকের অনুরোধ জানিয়েছে। এটি প্রমাণ করে, রাশিয়ার আগ্রাসী নীতি এখন ইউরোপের স্থিতিশীলতার জন্য নজিরবিহীন হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
এফপি/রাজ