Dhaka, Tuesday | 18 November 2025
         
English Edition
   
Epaper | Tuesday | 18 November 2025 | English
হাসিনা-কামালের বিচারে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের মানদণ্ড পূরণ হয়নি
এবারের নির্বাচন দেশ রক্ষার: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকার আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে
হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ে গণ সিজদাহ্
শিরোনাম:

টর্চার কক্ষে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে নির্যাতন

প্রকাশ: সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০:৪৪ এএম  (ভিজিটর : ৪৫)

রাজশাহীতে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে নির্মম শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। মাদ্রাসার একটি ‘টর্চার কক্ষে’ জুহায়ের তাজিম (১৬) নামের শিক্ষার্থীকে পরপর দুই দিন কয়েক দফায় বেধড়ক পেটানো হয়েছে।

এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থী শারীরিক ও মানসিক আঘাতে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।

রাজশাহী মহানগরীর কয়েরদাঁড়া খ্রিস্টানপাড়া মোড় এলাকার মাইনজ ইসলামিক ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের হিফজ শাখার স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজ রহমানের বিরুদ্ধে এ অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতিত শিক্ষার্থী তাজিম জেলার বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌর সদরের মুগনি শাহের ছেলে।

এ ঘটনায় তাজিমের মা জাকিয়া সুলতানা রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় মাদ্রাসাটির পরিচালক আইরিস পারভীন এবং স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে শনিবার রাতে এজাহার দায়ের করেছেন।

এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গত ১৩ এবং ১৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজ রহমান তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার ছেলেকে নির্মমভাবে শারীরিক নির্যাতন করেছেন। তিনি আমার ছেলের দুই হাত এবং দুই পায়ের উরু ও নিতম্বে বেত, পর্দার পাইপ ও লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এর ফলে আমার ছেলে মারাত্মকভাবে শারীরিক এবং মানসিক ক্ষতির শিকার হয়েছে।

ঘটনাটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আইরিস পারভীনকে জানানো হয়। তবে তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। বরং তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজ রহমান শুধু আমার ছেলেকেই নই, মাদ্রাসার আরও অনেক শিক্ষার্থীকে প্রতিনিয়ত শারীরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতন করে চলেছেন। মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ইশতিয়াক, ইসমাইল এবং আবু সাঈদসহ অনেকেই নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

নির্যাতিত শিক্ষার্থী তাজিম তাকে ভয়াবহ নির্যাতনের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজ রহমান আমার বিরুদ্ধে একটি নোংরা অভিযোগ আনেন। গত ১৩ সেপ্টেম্বর বিকালে শ্রেণিকক্ষ থেকে তিনি আমাকে ডেকে নেন। এরপর একটি ছোট নির্জন কক্ষে নিয়ে যান। বেত, পর্দার পাইপ এবং লাঠি দিয়ে আমাকে বেধড়ক পেটান। পরের দিনও তিনি আমাকে একইভাবে মারধর করেছেন। কক্ষটি মাদ্রাসার টর্চার সেল হিসেবে পরিচিত। এখানেই অন্য শিক্ষার্থীদেরও প্রতিনিয়ত শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর।

তাজিমের মা জাকিয়া সুলতানা বলেন, ১৪ সেপ্টেম্বর আমরা বারবার ফোন দিলেও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ফোন ধরেনি। পরের দিন সন্ধ্যায় আমার ছেলে মাদ্রাসা থেকে গোপনে চলে আসে। এ সময় তাকে আসতে বাধা দেন পরিচালক আইরিস পারভীন এবং স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজ। পরে একরকম জোর করেই আমার ছেলে মাদ্রাসা থেকে বেরিয়ে আসে। ছেলে শারীরিক এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ব্যথা। খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কম কথা বলছে। তাকে নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় পড়েছি। তার ওপর যারা নির্যাতন চালিয়েছেন, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় জোর দাবি জানাচ্ছি।

নির্যাতনের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজ রহমানকে ফোন দেওয়া হয়। ফোন না ধরলে তাকে হোয়াটসঅ্যাপে নির্যাতনের ঘটনার বর্ণনা এবং থানার এজাহার দায়েরের বিষয়টি অবগত করে মেসেজ (বার্তা) দিলে তিনি রেসপন্স করেন। তিনি লেখেন, ‘অভিযোগ কবে, কে করেছে, একটু বিস্তারিত বলবেন প্লিজ।’ এরপর তিনি আর রেসপন্স করেননি। ফোন দেওয়া হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ কারণে অভিযোগ সম্পর্কে তার পরিপূর্ণ বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।

কিশোর শিক্ষার্থী তাজিমকে নির্যাতনের বিষয়টি স্বীকার করে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আইরিস পারভীন বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। আমার বাবা-মা অসুস্থ থাকার কারণে আমি বাসায় ছিলাম। এ সময় স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজ তাজিমকে মারধর করেছেন। এর আগেও তিনি শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করেছেন। তাকে সতর্ক করা হয়েছিল; কিন্তু তিনি আমার কথা না মেনে আবারও নির্যাতনের ঘটনা ঘটিয়েছেন। ইমতিয়াজকে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দিয়েছি। আমি অনুতপ্ত এবং লজ্জিত। যেসব শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার হয়েছে, তাদের পরিবারের কাছে আমি ক্ষমা চেয়েছি।

এ ব্যাপারে বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এফপি/অআ



সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝