বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের দীর্ঘ ৮ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে অবরুদ্ধ শিক্ষকদের স্বজন, বয়োবৃদ্ধ বাবা-মা এবং শুভাকাঙ্ক্ষীরা তাদের উদ্ধারের জন্য এগিয়ে আসেন। কিন্তু তাদেরকে বহিরাগত বলে প্রচার করা হচ্ছে।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. হেলাল উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে দেখা যায়, ৩১ আগস্ট পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীদের 'কম্বাইন্ড ডিগ্রি'র দাবি নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতি নিরসনে একটি জরুরি একাডেমিক কাউন্সিল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ২৫১ জন শিক্ষকের মধ্যে আলোচনার পর ৬টি সুপারিশ সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। তবে সভার সিদ্ধান্তের পর কোনো 'স্বার্থান্বেষী মহলের' ইন্ধনে পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে যায়।
শিক্ষার্থীরা শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে প্রায় ৩০০ জন শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে তালাবদ্ধ করে জিম্মি করে রাখে। অবরুদ্ধদের মধ্যে বয়স্ক, হৃদরোগী, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত এবং গর্ভবতী শিক্ষকরাও ছিলেন। দুপুরের প্রচণ্ড গরম ও অভুক্ত অবস্থায় শিক্ষকরা আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এতে কোনো কর্ণপাত করেনি।
বিকেলের দিকে আটকে থাকা শিক্ষকদের স্বজন ও স্থানীয় এলাকাবাসী উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় মিলনায়তনের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। একপর্যায়ে প্রায় আট ঘণ্টা পর মিলনায়তনের গেটের তালা ভেঙে অবরুদ্ধ শিক্ষকরা বের হতে সক্ষম হন। এসময় আন্দোলনকারী ছাত্ররা বাধা দিলে কয়েকজনের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয় এবং কিছু শিক্ষার্থী আহত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আহতদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, শিক্ষকদের মুক্তি দিতে আসা স্বজন বা পরিচিতদের 'বহিরাগত' হিসেবে আখ্যা দিয়ে শিক্ষার্থীদের উসকে দেওয়া হয়েছে। গেট কে ভেঙেছে, তা তদন্তসাপেক্ষ।
পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের জরুরি ভার্চুয়াল সভা ডাকা হয়। সেই সভায় বিশ্ববিদ্যালয় আইন-শৃঙ্খলা জেলা প্রশাসনের হাতে ন্যস্ত করা হয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তবে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ঘটনাকে একটি 'গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ' বলে মনে করছে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে।
এফপি/এমআই