Dhaka, Wednesday | 20 August 2025
         
English Edition
   
Epaper | Wednesday | 20 August 2025 | English
‘আমি মরার কারণ হলো পান্না’ চিরকুট লিখে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে কষে ‘থাপ্পর’, নেওয়া হলো হাসপাতালে
ডাকসুতে ছাত্রদলের প্যানেল ঘোষণা
কালিনগর ওয়াপদার বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙন, ঝুঁকিতে ১৩ গ্রাম
শিরোনাম:

চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার জটে স্বল্পমেয়াদি সমাধান নয়, প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা

প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৫, ১১:৫৫ এএম  (ভিজিটর : ১৯)

চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র। দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রায় ৯০ শতাংশ এ বন্দরের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। তাই এখানে কনটেইনার জট তৈরি হওয়া মানেই শুধু একটি টার্মিনালের ভেতরের সমস্যা নয়- বরং এর প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে পুরো অর্থনীতিতে।

বর্তমানে বন্দরের ধারণক্ষমতার তুলনায় কনটেইনার জমার সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। খালি কনটেইনার, নিলামযোগ্য ও ধ্বংসযোগ্য পণ্যভর্তি কনটেইনার দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকার কারণে কার্যকর জায়গা কমে যাচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে সপ্তাহান্তে ডেলিভারির গতি কমে আসা এবং অফডকগুলোর সীমিত সক্ষমতা। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে চাপের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। 
বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক এ বিষয়ে বলেন, “খালি ও নিলামযোগ্য কনটেইনার জমে থাকায় জায়গা সংকুচিত হচ্ছে। আমরা ডেলিভারি বাড়ানোর চেষ্টা করছি। সপ্তাহান্তে যদি অন্যান্য দিনের মতো কার্যক্রম চালানো যায়, তাহলে চাপ অনেকটা কমে আসবে।”

অবশ্য বন্দর কর্তৃপক্ষ কিছু অস্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ রাখছে। প্রয়োজনে কনটেইনার স্তরে স্তরে সাজানো, লালদিয়া বা বে টার্মিনালে অস্থায়ী সংরক্ষণ কিংবা অফডকগুলোতে পাঠানো- এসব পদ্ধতি স্বল্পমেয়াদি সমাধান দিতে পারে।

তবে ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, এ ধরনের উদ্যোগ সাময়িক স্বস্তি দিলেও সমস্যার মূল জায়গাগুলো অমীমাংসিত থেকে যায়। এক বন্দর ব্যবহারকারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্তব্য করেছেন, “প্রয়োজনে একটির ওপর চার-পাঁচ স্তর পর্যন্ত কনটেইনার রাখা সম্ভব। কিন্তু এটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হতে পারে না। মূল সমস্যার জায়গাগুলোতে সমাধান না আনলে জট আবারও ফিরে আসবে।”

চট্টগ্রাম সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম সাইফুল ইসলামও স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপে আস্থার সীমাবদ্ধতা দেখছেন। তাঁর ভাষায়, “বন্দর থেকে প্রচুর কনটেইনার অফডকে পাঠানো হচ্ছে। ফলে বড় কোনো সংকট হবে না। তবে দীর্ঘমেয়াদে কনটেইনার ম্যানেজমেন্টে প্রযুক্তি ব্যবহার ও নীতিগত সংস্কার জরুরি।”

এ প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদদের দৃষ্টিভঙ্গিও গুরুত্ব বহন করে। অর্থনীতিবিদ গিয়াস উদ্দিন মনে করিয়ে দেন, “বন্দরজট মানে ব্যবসায়ীর ক্ষতি, শিল্পের উৎপাদন ব্যাহত হওয়া এবং শেষ পর্যন্ত ভোক্তার কষ্ট। তাই এ সমস্যাকে শুধু লজিস্টিক ইস্যু হিসেবে দেখা যাবে না, বরং অর্থনীতির নিরাপত্তা হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।”

বাস্তবতা হলো, প্রতিদিন আমদানি–রপ্তানির হাজার হাজার কনটেইনার এ বন্দরে ওঠানামা করে। সামান্য জট তৈরি হলেও পণ্য খালাসে বিলম্ব ঘটে, ব্যবসায়ীরা বাড়তি খরচের মুখে পড়ে, আর বাজারে এর প্রভাব পড়ে পণ্যমূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে। অর্থাৎ বন্দরের ভেতরের একটি সংকট পুরো দেশের মানুষের জীবনযাত্রাকে স্পর্শ করে।

চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার জট নিয়ে এর আগে বহুবারই আতঙ্ক দেখা গেছে। কয়েকদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও, সমস্যার মূলে যেহেতু কার্যকর সমাধান আনা হয়নি, তাই সংকট বারবার ফিরে এসেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন সময় এসেছে এ সমস্যাকে অস্থায়ী উদ্যোগ দিয়ে ঢাকার চেষ্টা না করে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে টেকসই সমাধান করার। তাঁদের ভাষায়, “এখন আর সময়ক্ষেপণের সুযোগ নেই। অন্যথায় দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর একই চক্রে ঘুরপাক খেতে থাকবে এবং এর বোঝা বইতে হবে পুরো অর্থনীতিকে।”

এফপি/রাজ
সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝