জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছে ‘জুলাই জাতীয় সনদ–২০২৫’-এর পূর্ণাঙ্গ খসড়া। এতে মোট ৮৪ দফা বিষয়বস্তু ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে বিশেষভাবে প্রণীত ৮ দফা অঙ্গীকারনামা সংযুক্ত করা হয়েছে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) রাত সোয়া ৯টার দিকে কমিশনের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। কমিশন জানিয়েছে, খসড়ার ভাষা, শব্দচয়ন, বাক্যগঠন বা অন্য কোনো প্রস্তাবনা সংশোধনের প্রয়োজন হলে আগামী ২০ আগস্ট বিকেল ৪টার মধ্যে তা কমিশনের কার্যালয়ে লিখিতভাবে জমা দিতে হবে।
এর আগে গত ২৮ জুলাই কমিশন প্রাথমিক খসড়া প্রকাশ করে রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর কাছে পাঠায়। পরবর্তীতে বিভিন্ন দলে দলে বৈঠক, আলোচনা ও বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণের মাধ্যমে খসড়াটি চূড়ান্ত করা হয়েছে।
অঙ্গীকারনামার প্রধান ৮ দফা
১. জনগণের দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম ও ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের ত্যাগ-রক্তদানের প্রতিফলন হিসেবে ‘জুলাই জাতীয় সনদ–২০২৫’-এর পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হবে।
২. জনগণ রাষ্ট্রের মালিক—এই নীতিতে সনদের সব প্রস্তাব সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং বিদ্যমান কোনো আইনের সঙ্গে ভিন্নতা থাকলে সনদের বিধানই প্রাধান্য পাবে।
৩. সনদের ব্যাখ্যা সংক্রান্ত যে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়ার এখতিয়ার থাকবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ওপর।
৪. সনদের বৈধতা বা কর্তৃত্ব নিয়ে আদালতে কোনো প্রশ্ন তোলা যাবে না; প্রতিটি বিধান আইনগতভাবে কার্যকর হবে।
৫. সংবিধান, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচন, প্রশাসন, পুলিশ ও দুর্নীতি দমন ব্যবস্থায় প্রস্তাবিত সংস্কার কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধন ও নতুন আইন প্রণয়ন করা হবে।
৬. গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের সংগ্রাম এবং ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্য রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাবে।
৭. গণঅভ্যুত্থান চলাকালে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা, শহীদ পরিবারকে সহায়তা ও আহতদের চিকিৎসা–পুনর্বাসন নিশ্চিত করা হবে।
৮. অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশগুলো কোনো কালক্ষেপণ ছাড়াই পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই কার্যকর করা হবে।
কমিশন জানায়, এ খসড়া চূড়ান্ত করার আগে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ৩২ দফা আলোচনা এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে গণভোট বা অধ্যাদেশের মতো সাংবিধানিক পথেও সনদ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই সনদের অগ্রাধিকারযোগ্য বিষয়গুলো কার্যকর করার অঙ্গীকার করেছে কমিশন।
এফপি/রাজ