বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ টানা সোয়া চার বছর ধরে খাদ্য মূল্যস্ফীতির ‘লাল তালিকায়’ রয়েছে। ২০২১ সালের জুন থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত প্রতি মাসে দেশের খাদ্যপণ্যের দাম গড়ে ৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে। কিছু ক্ষেত্রে এই বৃদ্ধি ১৪ শতাংশ ছাড়িয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের সংজ্ঞা অনুযায়ী, যেসব দেশে খাদ্যপণ্যের মাসিক দাম বৃদ্ধির হার ৫ থেকে ৩০ শতাংশের মধ্যে থাকে, তাদের ‘লাল তালিকায়’ রাখা হয়। এই তালিকায় থাকা মানে দেশটি খাদ্য মূল্যস্ফীতির দিক থেকে ঝুঁকিপূর্ণ। ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসলেই এই তালিকা থেকে বের হওয়া সম্ভব।
বাংলাদেশে সর্বশেষ ২০২১ সালের মে মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ ছিল। এর পর থেকে কখনোই তা ৫ শতাংশের নিচে নামেনি। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে এই হার বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ, যা ২০০৭–০৮ অর্থবছরের রেকর্ডের সমান।
সাম্প্রতিক সময়ে চাল, সবজি, ডিম, মুরগির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আবারও বাড়তে শুরু করেছে। বাজার পর্যবেক্ষকদের মতে, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে নিকট ভবিষ্যতে ‘লাল তালিকা’ থেকে বের হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, খাদ্য মূল্যস্ফীতি শুধু জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ায় না, বিনিয়োগ পরিবেশেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। লাল বা পিঙ্গল তালিকায় থাকা দেশগুলোর মুদ্রা স্থিতিশীল থাকে না, ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সেখানে বিনিয়োগে অনাগ্রহী হন।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, বৈশ্বিক মন্দার প্রভাব, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা এই দীর্ঘস্থায়ী মূল্যস্ফীতির অন্যতম কারণ। যদিও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার টাকা ছাপানো বন্ধ, ডলারের দাম স্থিতিশীল করা এবং পণ্যমূল্য কমাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে, তবুও খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখনো উচ্চ পর্যায়ে রয়ে গেছে।
এফপি/রাজ