খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. রুবেল আনসারের বিরুদ্ধে ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণ, যৌন হয়রানি ও অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বিভাগের এক ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রে এই অভিযোগ করেছেন। অভিযোগটি তদন্তের জন্য সাত সদস্যের কমিটি গঠন করেছে নিরোধ কেন্দ্র।
এদিকে তদন্ত চলাকালে অধ্যাপক রুবেল আনসারের ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে অভিযোগটি তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুরে শিক্ষার্থীরা এই ঘোষণা দেন। এরপর থেকে অধ্যাপক রুবেল আনসারের ক্লাস হয়নি।
তদন্ত কমিটির প্রধান ও খুবির যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের সভাপতি মোছা. তাসলিমা খাতুন বলেন, 'অভিযোগ তদন্তের জন্য সাত সদস্যের কমিটি কাজ শুরু করেছে।
এর আগে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রে জমা দেওয়া তিন পাতার অভিযোগে ওই ছাত্রী ধারাবাহিকভাবে তাকে হয়রানির অভিযোগের বিভিন্ন বর্ণনা দেন। এর সঙ্গে প্রমাণ হিসেবে ওয়াটসঅ্যাপে পাঠানো স্ক্রিনশর্টও জমা দিয়েছেন।
অভিযোগের একটি অংশে ওই শিক্ষার্থী উল্লেখ করেন, ‘হঠাৎ তিনি একদিন কল দেন এবং তার সাথে দেখা করার অনুরোধ করেন। আমি নিরালা মোড়ে গেলে তিনি কিছু কথা বলার অনুরোধ করে গাড়িতে উঠতে বলেন। তখন কথা বলার একপর্যায়ে গাড়ির ভেতরে (প্রকাশযোগ্য নয়) সরাসরি অনৈতিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন। আমি কথাগুলো শুনে আপত্তি করি এবং রেগে গাড়ি থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করি। তিনি তখন ড্রাইভ করা অবস্থায় আমার হাত চেপে ধরেন এবং বলেন ‘জেদ করো না; আমি যা চাই তাই আমার করে নিই। আজ না হোক কাল আমার ভালোবাসার চিহ্ন এঁকে দেবই। জোর করে তার হাত ছাড়ানোর পর আবার বলেন, আমি কখনো এত দিন কারও পেছনে ঘুরিনি, কারও জন্য অপেক্ষা করিনি, তোমার জন্যই এতদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে। আমি তোমার রেজাল্টও বাড়িয়ে দেব, তোমার রেজাল্ট ৩.৫০ হয়ে যাবে। এসব শোনার পরে আমি দ্রুত তার গাড়ি থেকে নেমে কোনো রকমে আত্মরক্ষা করি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. রুবেল আনসার এক ফেসবুক পোস্টে জানান, ‘বিষয়টি ভিত্তিহীন, অবাস্তব ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তদন্তে যদি আমার দোষ প্রমাণিত হয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রদেয় শাস্তি আমার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। আর যদি এই ঘটনার সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা না থাকে তদন্ত শেষে তাও সকলে জানতে পারবেন। কাজেই প্রকৃত সত্য উদঘাটন হওয়া পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য্য ধারণ করার অনুরোধ করছি।’
এফপি/রাজ