জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান ছিল এই দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। এ আন্দোলনের মূল শক্তি ছিল দেশের তরুণ প্রজন্ম ও সাধারণ মানুষ। যারা বুক চিতিয়ে রুখে দাঁড়িয়েছিল স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে।
৫ আগস্ট (মঙ্গলবার) পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) আয়োজিত স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভায় এক আবেগঘন ভাষণে একথা বলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুল-আওয়াল।
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় মানে শুধু পাঠ নয়—চেতনার উন্মেষ, ইতিহাসের পাঠ এবং মূল্যবোধের বিকাশ। আমরা চাই, পাবিপ্রবি’র প্রতিটি শিক্ষার্থী জানুক, তারা কেমন একটি ঐতিহ্যবাহী আন্দোলনের উত্তরাধিকার বহন করছে।”
উপাচার্য আরও বলেন, “এই দিবসটি শুধু স্মরণ করার জন্য নয়- তরুণ প্রজন্মের মাঝে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও দেশপ্রেমের বীজ বপন করার এক অনন্য সুযোগ।”
বিজয় র্যালিতে মুখরিত ক্যাম্পাস, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিলো উল্লেখযোগ্য।
সকাল ১০টায় প্রশাসন ভবন চত্বর থেকে শুরু হয় বিজয়ের বর্ণাঢ্য র্যালি। বাদ্যযন্ত্র, স্লোগান, ব্যানার আর প্রাণচাঞ্চল্যে মুখর হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস। র্যালিটি ঘুরে উপাচার্য ভবনের সামনে এসে শেষ হয়।
র্যালিতে উপাচার্য ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জুলাই উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক কামরুজ্জামান খান, প্রক্টর অধ্যাপক কামরুজ্জামান খান, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ ফারুক হোসেন চৌধুরী, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী।
সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত হয় শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ বিষয়কে কেন্দ্র করে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তাদের রঙ তুলিতে তুলে ধরে গণতন্ত্রের বর্ণিল স্বপ্ন।
পর্যবেক্ষক শিক্ষকরা বলেন, ‘ছোটদের তুলিতে বড় বার্তা—এটা শুধুই প্রতিযোগিতা নয়, ভবিষ্যতের সচেতন নাগরিক তৈরির পথচলা।’
বাদ আসর কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত হয় মূল স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা। যেখানে বক্তারা ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানের পটভূমি, অংশগ্রহণ, শহীদদের আত্মত্যাগ এবং পাবিপ্রবির ভূমিকাকে তুলে ধরেন।
উপাচার্য ছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপকবৃন্দ, আন্দোলন স্মৃতিবিজড়িত ছাত্রনেতারা এবং বর্তমান প্রজন্মের প্রতিনিধি শিক্ষার্থীরা। সভা শেষে চিত্রাঙ্কনসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
দিনব্যাপী কর্মসূচির চূড়ান্ত পর্ব ছিল এক অনবদ্য সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে পরিবেশিত হয় বিভিন্ন পরিবেশনা।
এফপি/রাজ