জামালপুরের মাদারগঞ্জে হঠাৎ করেই জুলাই মাসে বিদ্যুৎ বিল কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। অনেক গ্রাহকের ৯০০ টাকার মাসিক বিল একলাফে ৬ হাজার টাকায় পৌঁছেছে, কারো কারো ৪০০ টাকার বিল বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার টাকারও বেশি। বিদ্যুৎ বিলের এমন অসঙ্গতিতে চরম বিড়ম্বনায় পড়েছেন গ্রাহকরা।
জামালপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি মাদারগঞ্জ জোনাল অফিস সুত্রে জানা গেছে, সারা উপজেলায় প্রায় ১ লাখের মত গ্রাহক রয়েছে। এর মধ্যে ৬২ হাজার গ্রাহক মাদারগঞ্জ জোনাল অফিসের আওতাধীন ও ৩৫ হাজার গ্রাহক কয়ড়া সাব জোনাল অফিসের আওতাধীন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার কড়ইচড়া ইউনিয়নের ভেলামারী এলাকার কৃষক বাট্টু মিয়ার জুন মাসে বিদ্যুৎ বিল আসে ৯৬৮ টাকা কিন্তু জুলাই মাসে একলাফেই বিল এসেছে ৫,৯৩৪ টাকা। হঠাৎ এমন অস্বাভাবিক বিল দেখে হতবাক তিনি, যা কোনমতেই মেনে নিতে পারছেন না। এ ঘটনায় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের মিটার রিডার কাম মেসেঞ্জারকে দায়ী করে তার বিচার দাবি করেছেন বাট্টু মিয়া।
একই এলাকার কৃষক আব্দুল কাইয়ুম। গত জুন মাসে তার বিদ্যুৎ বিল আসে ৪১৪ টাকা কিন্তু জুলাই মাসে বিদ্যুৎ বিল এসেছে ২৩০০ টাকা। শুধু ভেলামারির বাট্টু ও কাইয়ুম নন, পল্লীবিদ্যুৎ এর এমন অস্বাভাবিক বিলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন উপজেলার শত শত গ্রাহক।
মাদারগঞ্জ জোনাল অফিসের আওতাধীন বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের জামথল এলাকার গ্রাহক আমান উল্লাহ। তার জুন মাসে বিল আসে ৪৩০ টাকা। এবার জুলাই মাসে একলাফে এসেছে ৩০০০ টাকা। কড়ইচড়া ইউনিয়নের ভেলামারি এলাকার দরিদ্র জেলে বাদশা। গত জুন মাসে তার বিদ্যুৎ বিল আসে ৪২৭ টাকা কিন্তু জুলাই মাসে তার বিল এসেছে ২৭০০ টাকা।
বাদশা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এতো টাকা আমরা কেমনে দিমু? এমন বিল যারা তৈরি করেছে তাদের বিচার দাবি করছি। একই এলাকার গ্রাহক বাবুল মিয়া, গত জুন মাসে তার বিদ্যুৎ বিল আসে ৫০০ টাকা। এবার জুলাই মাসে তার বিল এসেছে ৩০০০ টাকা। এতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে এই কারসাজিতে যারা দোষী তাদের বিচার দাবি করেন তিনি।
জামালপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি মাদারগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম প্রকৌশলী ওবায়দুল্লাহ আল মাসুম বলেন, গত মাসে গ্রাহকরা বিদ্যুৎ ভালো পায়নি। ঝড় বৃষ্টি ইত্যাদি সমস্যা ছিল। তাই বিদ্যুৎ বিল কম এসেছে। জুলাই মাসে এতো অস্বাভাবিক বিল আসার কারণ জানতে চাইলে ওবায়দুল্লাহ আল মাসুম জবাবে বলেন, জুলাই মাসে বিদ্যুৎ বেশি পেয়েছে। মটর বা অন্যকিছু ব্যবহার করেছে তা না হলে মিটার নষ্ট এই ৩টি কারণে বিদ্যুৎ বেশি আসতে পারে।
গ্রাহকদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, যেসব গ্রাহকদের অভিযোগ বা অসংগতি আছে সেসব গ্রাহকরা অফিসে আসা মাত্র আমরা দেখে দিচ্ছি। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।
এফপি/এমআই