প্রশাসনিক দৈন্যতায় নাকাল কক্সবাজার জেলার দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া। উপজেলার অধিকাংশ সরকারি দপ্তরে নেই স্থায়ী অফিস প্রধান। গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো চলছে অতিরিক্ত বা ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে। এতে করে ব্যাহত হচ্ছে সেবা কার্যক্রম। ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।
দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া যেন চলছে ভারপ্রাপ্তদের ভরসায়। কক্সবাজার জেলার এই উপজেলা বর্তমানে প্রশাসনিক দৈন্যতায় পর্যুদস্ত। দপ্তরগুলোর করুণ চিত্র।ফলে থমকে আছে বিভিন্ন উন্নয়ন ও জনসেবামূলক কর্মকাণ্ড। বঞ্চনার শিকার হচ্ছে দ্বীপের সাধারণ মানুষ।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, সমাজসেবা কর্মকর্তা, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, বিআরডিবি, শিক্ষা, মৎস্য, পানি উন্নয়ন বোর্ড, পরিসংখ্যান, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সহ প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে নেই স্থায়ী কর্মকর্তা। অধিকাংশ দপ্তরের দায়িত্ব চলছে পাশ্ববর্তী উপজেলা থেকে অতিরিক্ত দায়িত্বে আসা কর্মকর্তাদের হাতে। যারা মূলত কাগজে থাকলেও বাস্তবে সশরীরে থাকেন না।
কুতুবদিয়া হাসপাতাল থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটি অফিসে রয়েছে জনবল সংকটের চিত্রও। অফিসে কাজের পাহাড় জমলেও কর্মীর অভাবে সেসব ফাইলে ধুলো জমছে দিনের পর দিন। জরুরি সেবাও মিলছে না সময়মতো। দ্বীপের মানুষ সরকারি দপ্তরে গিয়ে ফিরে আসছেন হতাশ হয়ে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, “দ্বীপবাসী ন্যূনতম সেবাটুকুও পাচ্ছে না। সবকিছুই চলছে কাগজে-কলমে, দায়সারাভাবে।”
এ বিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডাঃ সৈকত বড়ুয়া বলেন, “একাধিক উপজেলার দায়িত্ব পালন করা বাস্তবে সম্ভব নয়। চাপে আছি, একসাথে ২টি উপজেলার মানুষকেও সময়মতো সেবা দিতে বেগ পেতে হচ্ছে।”
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রেজাউল হাসান বলেন, “জনবল সংকট দীর্ঘদিনের। বিষয়টি আমরা বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশাকরি, সমাধান আসবে।”
তবে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে উপজেলার সিনিয়র সিটিজেন, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, “কুতুবদিয়াকে যদি একটি কার্যকর প্রশাসনিক ইউনিট হিসেবে গড়ে তুলতে হয়, তাহলে অবিলম্বে সকল দপ্তরে স্থায়ী নিয়োগ ও প্রয়োজনীয় জনবল নিশ্চিত করতে হবে।”
এফপি/রাজ