Dhaka, Friday | 24 October 2025
         
English Edition
   
Epaper | Friday | 24 October 2025 | English
পাঁচ ব্যাংক নিয়ে হচ্ছে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’
ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশনের টপ এগ্রি ফুড পাইওনিয়ার পুরস্কার পেলেন আবদুল আউয়াল মিন্টু
অতীতের ভুলের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন জামায়াত আমির
মাংস আমদানি করে দেশের ক্ষতি করতে চাই না: ফরিদা আখতার
শিরোনাম:

অতিবৃষ্টিতে নগরজুড়ে জলাবদ্ধতা, বাটালি পাহাড়ে ধসের শঙ্কা

প্রকাশ: সোমবার, ২৮ জুলাই, ২০২৫, ১১:৫৯ পিএম  (ভিজিটর : ৬১)

নিম্নচাপ ও সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে চট্টগ্রামে কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি চলছিল। তবে সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল থেকে শুরু হওয়া একটানা ভারি বর্ষণে নগরের নিচু এলাকাগুলোতে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক জনজীবন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

জিইসি, চকবাজার, মুরাদপুর, আগ্রাবাদ, দেওয়ানহাট, কাতালগঞ্জ, জামালখান, সিরাজদৌল্লাহ রোডসহ একাধিক এলাকায় সকাল থেকেই হাঁটু সমান পানি জমে যায়। এতে রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা কমে যায়, আর যেগুলো চলছিল সেগুলোর ভাড়া বেড়ে যায় দ্বিগুণ। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। অনেকে যানবাহন না পেয়ে হেঁটে রওনা হন, কেউ কেউ আবার সম্পূর্ণ ভিজে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছাতে বাধ্য হন।

চট্টগ্রাম কলেজ এলাকার এক অভিভাবক বলেন, “সাধারণ সময়ের তুলনায় দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে মেয়েকে সিএনজিতে তুলেছি। তাও পরীক্ষাকেন্দ্রে ঠিকমতো পৌঁছাতে পারিনি।” চকবাজার এলাকার সুমাইয়া আক্তার জানান, “রাস্তায় বের হয়ে দেখি পানি থইথই করছে। রিকশা নেই, আর পেলেও ভাড়া চায় অনেক বেশি।”

অতিবৃষ্টির এই দুর্ভোগের সঙ্গে যোগ হয়েছে পাহাড়ধসের শঙ্কা। নগরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত বাটালি পাহাড়ের পাদদেশে গড়ে ওঠা অবৈধ বসতিগুলো বর্তমানে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ের মাটি সরে যাচ্ছে, কিছু স্থানে ফাটলও দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসন বহুবার উচ্ছেদ অভিযান চালালেও এক শ্রেণির প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় আবারও সেখানে গড়ে উঠেছে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি।

স্থানীয় বাসিন্দা রহিমা খাতুন বলেন, "প্রতিবছরই পাহাড়ধসের ভয় থাকে। কিন্তু আমরা যাব কোথায়? আজ সকাল থেকে ঢাল বেয়ে পানি নেমেছে, ঘরে থাকতেও ভয়, বাহিরেও।"

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) দাবি করছে, জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৪ হাজার ৩৯ কোটি টাকার একটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। চসিকের প্রধান প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান সোহেল জানান, “বৃষ্টি থেমে গেলে অধিকাংশ এলাকায় দ্রুত পানি নামছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে জলাবদ্ধতা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে।”

তবে নাগরিকদের অভিযোগ, বছর পর বছর ধরে মেগা প্রকল্পের আশ্বাস শোনা গেলেও বাস্তবের চিত্র বদলায়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জলাবদ্ধতার ছবি ছড়িয়ে পড়তেই অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এক তরুণ লিখেছেন, “প্রতিবার বৃষ্টি হলেই শুধু রাস্তায় নয়, দায়িত্বহীনতা আর ব্যর্থতার চিত্রও উপচে পড়ে।”

এদিকে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, বৃষ্টির পাশাপাশি সমুদ্রের জোয়ার একত্রে হলে জলাবদ্ধতা আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। সেই সঙ্গে পাহাড়ি এলাকায় ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকলে বড় ধরনের পাহাড়ধসের ঝুঁকিও রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাটালি পাহাড় ঘেঁষা অবৈধ বসতিগুলো অবিলম্বে সরিয়ে না নিলে নগরবাসীকে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হতে পারে। চট্টগ্রামের অতীতের ভয়াবহ পাহাড়ধসের ঘটনা স্মরণ করিয়ে তারা সতর্ক করছেন- এখনই ব্যবস্থা না নিলে ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো অসম্ভব হবে।

এফপি/রাজ
সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝