চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার একটি স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান কলেজ এর একটু পরেই রয়েছে বেসরকারি হাসপাতা সাউন্ড হেল্থ হাসপাতাল। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আরেকটি হাসপাতালের মাঝখানে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশেই রয়েছে বিশাল এক ময়লার ভাগাড়। যেখানে প্রতিনিয়তই জমা হচ্ছে উপজেলার বটতলী শহরের প্রতিদিনের ময়লা।
ময়লা-আবর্জনার বিশাল স্তূপের কারণে দুর্ভোগে পড়েছে কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীর, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী এবং আশে পাশের ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা। মশা-মাছির উপদ্রবসহ দূষিত হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ। ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে আশেপাশের বাসিন্দারা। হাসপাতাল ও কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, লোহাগাড়া বটতলী শহর পরিচালনা কমিটির ময়লা-অবর্জনা ফেলা হচ্ছে কিন্তু শহর পরিচালনা কমিটি তা অস্বীকার করছে।
২৮ জুলাই রবিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আলহাজ্ব মোস্তফিজুর রহমান কলেজ ও সাউন্ড হেল্থ হাসপাতালের মাঝখানে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ঘেঁষে ময়লা-আবর্জনার বিশাল ভাগাড় রয়েছে। লোহাগাড়া বটতলীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নষ্ট হওয়া শাকসবজি, হোটেলের পঁচা-বাসি খাবার, মুরগির নাড়িভুঁড়ি এবং বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা ও গরুর ভুঁড়িসহ সব ধরনের আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই এগুলো পচে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হচ্ছে। উৎকট গন্ধের ফলে ছাত্র-ছাত্রী, রোগী ও রাস্তায় পথচারীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায়, অবর্জনার স্তুপ থেকে ছড়ানো উৎকট গন্ধে শিক্ষার্থী, রোগী, মুসল্লি, ব্যবসায়ী সহ সড়কে চলাচলকারী হাজারো মানুষকে নাক চেপে এ রাস্তায় চলাচল করতে হয়। আর বৃষ্টিতে ভিজে এবং রোদে শুকিয়ে এসব বর্জ্য পরিবেশের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে।
কলেজের ছাত্রী সিমা আক্তার বলেন, ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধের ফলে আমাদের কলেজে আসা যাওয়ায় ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। ময়লার দুর্গন্ধ অনেক সময় কলেজের ক্লাস রুমে পর্যন্ত চলে যায়। একটি কলেজের সামনে এমন ময়লার ভাগাড় মেনে নেওয়া যায় না। তাই আমাদের জোর দাবি এই স্থান থেকে দ্রুত ময়লা ভাগাড় অপসারণ করা হোক।
সাউন্ড হেল্থ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগী জানান, পাশের ময়লার দুর্গন্ধে হাসপাতলের বাইরে দাঁড়ানো কষ্টকর। এখানে একজন ভালো মানুষ আসলে সে রোগী হয়ে যাবে।
লোহাগাড়া বটতলী শহর পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব সরওয়ার আকতার জানান, বটতলী শহরের কোন ময়লা-অবর্জনা সেখানে ফেলা হয় না। আমাদের কোন লোক সেখানে ময়লা নিয়ে যায় না।
আলহাজ্ব মোস্তফিজুর রহমান কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছেতার উদ্দিন আহমেদ জানান, এই ময়লার ভাগাড়ের কারণে শিক্ষার পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এটা আমরা বেশ কয়েকবার প্রশাসনকে জানিয়েছি, প্রশাসন অনেকবার আশ্বাস দিয়েছে ময়লা সরানোর কিন্তু কোন এক অদৃশ্য হাতে তা আর বাস্তবায়ন হয় না।
লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইকবাল হোসাইন জানান, এই রকম খোলা জায়গায় ময়লা-অবর্জনা রাখার কারণে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে।
এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি উপজেলায় নতুন যোগদান করেছি। ইতিমধ্যে বিষয়টি আমার নজরে এসেছে সম্মিলিতভাবে সমাধানের চেষ্টা করবো।
এফপি/রাজ