রাজধানীতে ঘটে যাওয়া মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে আহত হয়ে শেষ পর্যন্ত না-ফেরার দেশে চলে গেছে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহিয়া তাসনিম (১৩)। অল্প বয়সেই থেমে গেছে একটি সম্ভাবনাময় প্রাণের গতি।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার জয়পুর গ্রামের স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
চুয়াডাঙ্গার কুড়ালগাছি গ্রামের প্রয়াত প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলীর মেয়ে মাহিয়া রাজধানীর উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টরে মায়ের সঙ্গে বসবাস করতো। সে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
সম্প্রতি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সংঘটিত ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে গুরুতর দগ্ধ হয় মাহিয়া। পরিবারের সদস্যরা জানান, তার শরীরের প্রায় ৫০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। তাকে ভর্তি করা হয় রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। টানা কয়েকদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টায় আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে।
মৃত্যুর পর রাতেই তার মরদেহ প্রথমে নেওয়া হয় নিজ গ্রাম চুয়াডাঙ্গার কুড়ালগাছিতে। পরে শুক্রবার সকালে দাফনের জন্য নেওয়া হয় মেহেরপুরের মুজিবনগরের জয়পুর গ্রামে তার নানাবাড়িতে। জানাজা ও দাফনের সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী ও সহপাঠীরা। পুরো জয়পুর ও কুড়ালগাছি এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।
নিহতের মা আফরো আক্তার বিউটি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যে প্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে, তার উপর দিয়ে কেন ওড়ানো হবে যুদ্ধবিমান? ওরা কি জানে না এটি আবাসিক এলাকা? আমাদের সন্তানের জীবন কি তারা ফিরিয়ে দিতে পারবে?
তিনি আরও বলেন, ৬০ বছরের পুরোনো যুদ্ধবিমান ওড়ানোর যৌক্তিকতা কী? ওরা চাইলে জঙ্গলে বা সাগরে অনুশীলন চালাতে পারতো। আমাদের সন্তানদের জীবন নিয়ে কেন এমন অবহেলা?
তাসনিমের মৃত্যু নতুন করে প্রশ্ন তোলে- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা, কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীলতা এবং অনুশীলনের নামে জনবহুল এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ কার্যক্রম চালানোর যৌক্তিকতা নিয়ে।এই মর্মান্তিক ঘটনায় তাসনিমের পরিবারসহ সচেতন মহল দ্রুত তদন্ত ও দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে।
এফপি/রাজ