রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের কচুয়া গ্রাম পর্যন্ত সড়কের বাদ থাকা প্রায় এক কিলোমিটার কাঁচা অংশে অবশেষে পাকাকরণের কাজ শুরু হয়েছে। এতে ওই ইউনিয়নের ৩ গ্রামের প্রায় ৫ হাজার মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।
র্দীঘদিন ধরে গ্রামীণ ওই সড়কে চলাচলের দুর্ভোগ নিয়ে বিগত জনপ্রতিনিধিদের বারবার জানানো হয়েছিল, কিন্তু কাজ হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এখন পাকা করার কাজ শেষ হলে দুর্দশা লাঘব হবে। যাতায়াতে কমবে কষ্ট। উৎপাদিত ফসল সহজে বাজারজাত করে ন্যায্যমূল্য মিলবে। ইতিমধ্যে, পাঁচন্দর ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের বরডাং মোড় হতে প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত পাঁকাকরণ ও পিচ ঢালায়ের কাজ শেষের পথে।
মূলত, ২৪-এর ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর পাঁচন্দর ইউনিয়নের বাসিন্দা ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তানোর উপজেলা শাখার আমীর মাওলানা আলমগীর হোসেনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় গ্রামীণ অবহেলিত এই রাস্তাটির কাজ হাতে নেয় উপজেলা প্রশাসন। সরকারিভাবে নতুন রাস্তা পেয়ে খুশি স্থানীয় এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাঁচন্দর ইউনিয়নের কচুয়া এলাকায় রাস্তা না থাকায় আশেপাশে তিনপাড়া এবং গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে নানা সমস্যায় পড়তে হতো তাদের। রাস্তা না থাকায় কৃষি পণ্যের সঠিক মূল্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতেন কৃষকেরা। রাস্তা কাঁচা থাকার জন্য কৃষি ফসলগুলো মাথায় করে জমির আইল ধরে নিয়ে যেতো হতো বাজারে। বর্ষার সময় বিকল্প পথ জমির আইল ধরে যেতে হতো। শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যেতে হতো নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে।
এলাকার প্রতিনিধি আব্দুস সাত্তার, বলেন আমাদের সাত নম্বর ওয়ার্ড কচুয়া এলাকায় পাঁচটি ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। ওসব প্রতিষ্ঠানে বর্ষা মৌসুমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বহু দূরে গাড়িগুলো গ্যারেজ করে পাঁয়ে হেঁটে আসতো। এবং প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মচারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অনেক কষ্ট পেয়েছেন এ কাঁচা রাস্তার জন্য।
এলাকার বাসিন্দা আলহাজ্ব তমির উদ্দিন কাজী বলেন, এখন রাস্তা পাঁকা হওয়ায় সহজেই আমরা যাতায়াত করতে পারবো। কোনো মানুষ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নিতে কষ্ট হতো। গ্রামের আরেক বাসিন্দা সবির উদ্দিন বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই এই পথ দিয়ে গ্রামবাসীরা চলাচল করতো। কিন্তু কোনো রাস্তা নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ইউনিয়ন পরিষদের পরপর কয়েকবার চেয়ারম্যান ও সদস্য (মেম্বার) পরিবর্তন হলেও উক্ত রাস্তা নির্মাণে ভাগ্য অপরিবর্তিতই থাকে।
তবে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর পাঁচন্দর ইউনিয়নের বাসিন্দা ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর তানোর উপজেলার আমীর মাওলানা আলমগীর হোসেনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় গ্রামীণ অবহেলিত এ রাস্তাটির কাজ হাতে নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। আমরা জামায়াতের তানোরের আমীর মহোদয় ও বর্তমান সরকারের কাছে চির কৃতজ্ঞ।
সম্প্রতি নির্মাণাধীন সড়কে গিয়ে কথা হয় কচুয়া গ্রামের খাদিজা বিবির সঙ্গে। তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুমে ওই এক কিলোমিটার রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া খুব কষ্টের ছিল। রাস্তাটা পাকা বানানোর আশ্বাসে বিগত দিনে অনেককে ভোট দিয়ে মেম্বার, চেয়ারম্যান, এমপি বানাই ছিলাম। বহু জায়গায় ধরনা দিয়েছি তাও রাস্তা হয় নাই। এবার ইউনুস সরকার স্থানীয় জামায়াত নেতা আলমগীরের সুবাদে ও চেষ্টায় মুখ তুলে চাইছেন। ওই জন্যে রাস্তাটা পাকা বানাচ্ছে। সরকারকে আমাদের গ্রামবাসীর পক্ষ থাকে ধন্যবাদ।
পাঁচন্দর ইউনিয়নের বাসিন্দা ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর তানোর উপজেলার আমীর মাওলানা আলমগীর হোসেনের মতে, সড়ক পাকা হওয়ার মাধ্যমে হাজারো মানুষের কষ্ট লাঘব হতে যাচ্ছে। কৃষকের পণ্য পরিবহন, শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াত খুব সহজ হবে। নিয়মিত রিকশাভ্যান, ইজিবাইক, সাইকেল, মোটরসাইকেল চলবে। বিশেষ করে আশেপাশে গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের রাস্তার স্বপ্ন পূরণে এলাকার ছেলে হিসেবে সরকারি বিভিন্ন দফতরে আবেদন করেছি। পর্যায়ক্রমে পাঁচন্দর ইউনিয়নের সকল কাঁচা রাস্তা সহ তানোর জুড়ে সকল রাস্তা পাকাকরণে তানোর উপজেলা জামায়াতে ইসলামি কাজ করে যাবে বলেও তিনি জানান।
তানোর উপজেলা প্রকৌশলী সাইদুর রহমান বলেন, বরাদ্দ আসার পর দরপত্রের মাধ্যমে রাস্তাটির কাজ শুরু করা হয়। কাজ শেষ হলে আশপাশের হাজারো মানুষের কষ্ট দূর হবে।’
এফপি/রাজ