সরকারি প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের ঘৃণ্য চিত্র উঠে এসেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তা হলেন গাংনী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোঃ মনসুর রহমান। অভিযোগ উঠেছে- নিজ অফিসের পিয়নকে ভুয়া প্রকল্পের সভাপতি (পিআইসি) বানিয়ে সরকারিভাবে বরাদ্দ পাওয়া ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা একাই আত্মসাৎ করেছেন তিনি। প্রকল্পের ছিটেফোঁটাও বাস্তবে হয়নি।
ঘটনার শুরু গাংনী পৌরসভার টিআর প্রকল্প ঘিরে। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে পৌরসভা থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয় ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা- উপজেলা চত্বরের বাউন্ডারি ওয়াল প্লাস্টারের জন্য। বরাদ্দও পৌঁছায় প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে। কিন্তু সেই টাকা ব্যবহার করে কোনও কাজ তো হয়নি, বরং প্রকল্পের দায়িত্ব দেখানো হয় অফিস পিয়ন আব্দুর রশিদের নামে! যিনি নিজেই জানেন না তিনি কাজের সভাপতি।
পিয়ন আব্দুর রশিদ বললেন, টাকা-পয়সা কিছুই পাইনি। অফিসে স্যারেরা যা করেছেন, সেটাও আমি বলতে পারি না।
এদিকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনসুর রহমান সংবাদকর্মীর মুখোমুখি হয়ে সরাসরি কোনো জবাব না দিয়ে বলেন, এ বিষয়ে হাবিব জানে, ওর সঙ্গে কথা বলেন।
স্থানীয় এক বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকারি কর্মকর্তা যদি নিজের পিয়নের নামে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে টাকা মেরে দেয়, তাহলে আর বলার কিছু থাকে না। এটা শুধু দুর্নীতি না, এটা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা।
গাংনী পৌরসভার প্রকৌশলী শামীম রেজা জানান, আমরা শুধু বরাদ্দ দিয়েছি। প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পুরোপুরি পিআইও অফিসের। কাজ হয়েছে কিনা, সেটা তারাই জানবে। আমরা কিছু জানি না।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার হোসেন জানান, অফিসের কেউ কাজের সভাপতি হতে পারে না। আর যদি কাজের ক্ষেত্রে কোন প্রকার অনিয়ম হয়ে থাকে অবশ্যই প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দুর্যোগ ও ত্রাণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রেজওয়ানুর রহমান মুঠফোনে বলেন, যদি কোন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এমন দুর্নীতির সাথে যুক্ত হয়ে থাকেন। তাহলে সেই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অফিশিয়ালি আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এফপি/রাজ