পঞ্চগড়ের তেঁতলিয়ায় ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে সরকারিভাবে বোরো-ইরি সংগ্রহে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তেঁতুলিয়ার অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার তেঁতুলিয়া সদর ও ভজনপুর খাদ্য গুদামে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে প্রতি কেজি শুকনা ধান ৩৬ টাকা দরে মোট ৪৩৭ মেট্রিক টন বোরো-ইরি ধান ক্রয়ের বরাদ্দ আসে। তদ্মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৩৫০ মে. টন এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ৮৭ মে.টন।
জানা যায় বরাদ্দকৃত বোরো-ইরি ধান সরাসরি কৃষকদের কাছে কৃষকের অ্যাপেস-এ পাইলটিং কার্যক্রম (ডাব্লিউ কিউ এস সি) ফরমে আবেদনকৃত কৃষকদের তালিকা প্রিন্ট করবে। পরে উক্ত তালিকা উপজেলা খাদ্য শস্য সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটির আলোচনা সভার সিদ্ধান্তক্রমে যাচাই-বাছাই শেষে লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত কৃষকরাই বোরো-ইরি সরবরাহ করার কথা। কিন্তু উপজেলা খাদ্য শস্য সরবরাহ ও মনিটরিং কমিটির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় ও সংশ্লিষ্ট খাদ্য গুদামের পরিদর্শক মনগোড়া তালিকার ভিত্তিতে বোরো-ইরি ধান কিনেছে। ফলে প্রকৃত বোরো-ইরি চাষিরা সরকারি খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে বঞ্চিত হয়েছে অভিযোগ উঠেছে। অপরপদিক একশ্রেণির ফড়িয়া ব্যবসায়ীর কাছে এসব ধান সংগ্রহের অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, খাদ্য গুদামে ধান বিক্রির সময় মিটার পাশে আদ্রর্তা ১৩% হলে টন প্রতি ৩হাজার এবং ২০% হলে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা কমিশন দিলে আর্দ্রতার কোন বালাই থাকে না। যারা দিতে অপরাপগতা প্রকাশ করে তাদের বেলা নানা সমস্যা দেখায়ে ধান কিনে না। সাধারণ কৃষক ও সচেতন মহলের অভিযোগ, পঞ্চগড় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার নিয়মিত পরিদর্শন ও মনিটরিং অভাবে খাদ্যগুদামের কর্তারা নানাবিধ অনিয়ম করে আসছে।
তৎকালীন অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা তেঁতুলিয়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. কামরুজ্জামান যিনি বর্তমানে পদোন্নতিপ্রাপ্ত রংপুর বিভাগে সহকারি আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মুঠোফোনে বলেন, আমি সেখান থেকে বদলী হয়ে এসেছি, এখন এত কিছু খেয়াল নেই।
তেঁতুলিয়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. জাকারিয়া আহমেদ বলেন, আমি তেঁতুলিয়ায় একমাস আগে যোগদান করেছি। কৃষক অ্যাপসে আবেদনকারীদের কাছ থেকে কেনা হয়েছে এবং তাদের এ্যাকাউন্টে বিল পরিশোধ করা হয়েছে। কিন্তু এবছর লটারি করা হয়নি।
উপজেলা হিসাবরক্ষন অফিসার মো. মোশাররফ হোসেনের কাছে কতজন কৃষকের নামের হিসাবে সোনালি ব্যাংকে বিল পরিশোধ করেছে সংখ্যা ও বিল নম্বর জানতে চাইলে তিনি দিতে পারেননি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফরোজ শাহীন খসরু ও উপজেলা খাদ্যশস্য সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটির সভাপতি বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে বোরো-ইরি সংগ্রহের জন্য কোন আলোচনা সভা এবং লটারি করা হয়নি। কোন প্রক্রিয়ায় সংগ্রহণ করেছে সংশ্লিষ্ট খাদ্য গুদামের পরিদর্শকসহ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জানেন।
এবিষয়ে পঞ্চগড় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অন্তরা মল্লিকের মুঠোফোনে একাধিবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এফপি/এমআই