জামালপুরের মাদারগঞ্জে মাত্র ১১ হাজার টাকা জমা দিলেই সহজ শর্তে ঋণ পাবেন এক লাখ টাকা আর তা পরিশোধ করতে পারবেন দুই বছর ধরে। এমন নানা স্কিমে প্রলোভন দেখিয়ে শতাধিক মানুষের কাছ থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে একটি এনজিও। তবে ভুক্তভোগীরা ওই এনজিওর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম-পরিচয় বলতে পারেননি।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিকেলে ঋণ দেওয়ার কথা থাকলেও দুপুরের পর থেকে তাদেরকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ সময় অনেকেই প্রতারণার শিকার হয়েছেন জেনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। ওই প্রতিষ্ঠানটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর ৪৩৯/১৯৯০ ইং লেখা থাকলেও সেটি কোন প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় মিরপুর ২ এর ডি-ব্লকে সঞ্চয় বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, গত দুইদিন ধরে ‘সমাজ কল্যাণ উন্নয়ন সংস্থা’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা(এনজিও) পরিচয়ে মাঠপর্যায়ে সদস্য সংগ্রহ শুরু করেন। তবে তারা নিজেদের নাম ও পরিচয় প্রকাশ করেননি। তারা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ২০০ টাকার বিনিময়ে সদস্য সংগ্রহ করে। এ সময় তারা ১১ হাজার টাকা জমা দিলে এক লাখ টাকা ঋণ প্রদান এবং তা দুই বছরে পরিশোধ করার সুযোগ প্রদানসহ নানা প্রলোভন দেখায়।
মাদারগঞ্জ পৌরসভার ক্ষুদ্র জোনাইল এলাকার ভুক্তভোগী শিউলী বেগম বলেন, মঙ্গলবার সকালে ৩ লাখ টাকা ঋণ দেবে বলে ৩৩ হাজার টাকা নিয়েছে সমাজ কল্যাণ উন্নয়ন সংস্থা লোকজন। বেলা ১১টার দিকে তাকে বালিজুড়ী বাজারের দোস্ত মার্কেট মল্লিকা প্লাজায় তাদের অফিস ঘুরে দেখান এবং বিকাল ৩টার দিকে ওই ভবনের ছাদে ৫ শত মানুষের মাঝে ঋণ বিতরণ করে বলে জানান। কিন্তু বিকালে অফিসে এসে দেখি তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। ওই সংস্থার কোন লোকজন নেই।
একই এলাকার মিনা বেগম বলেন, গত দুইদিন ধরে সমাজ কল্যাণ উন্নয়ন সংস্থা লোকজন ৬ লাখ টাকা ঋণ দিবে বলে আমাদের বাড়িতে ঘোরাঘুরি করে। মঙ্গলবার সকালে ৬০ হাজার তাদের কাছে জমা দেই। বিকালে ৬ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল, এসে দেখি অনেক মানুষ জড়ো হয়েছে। কিন্তু ওই এনজিওর কেউ নেই।
একই এলাকার শিপা আক্তার ১১ হাজার, লাকি বেগম ১১ হাজার, ইতি খাতুন ১১ হাজার, চায়না বেগম ১১ হাজার, তাহমিনা ১১ হাজার এবং ফরিদা বেগম ২২ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন বলে জানান।
বালিজুড়ী বাজারের দোস্ত মার্কেট মল্লিকা প্লাজায় মালিক ইমান আলী বলেন, সোমবার বিকালে বেশ কয়েকজন লোক আমার কাছে অফিস ভাড়া নেওয়ার কথার বলেন। তারা বলেন এটি আকিজ কোম্পানির অফিস হবে। মঙ্গলবার বিকালে তারা আমার সাথে ডিট করবে। এখন শুনি তারা অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চলে গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে এনজিওটির মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
মাদারগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল্লাহ সাইফ বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এফপি/রাজ