দেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল) তাদের বার্ষিক শোধন ক্ষমতা ছাড়িয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এ প্রতিষ্ঠানটি ১৫ লাখ টন শোধন ক্ষমতার বিপরীতে ১৫ লাখ ৩৫ হাজার টন জ্বালানি তেল পরিশোধন করেছে।
আজ মঙ্গলবার (০১ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় ইআরএলের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান কর্তৃপক্ষ।
সম্মেলনে ইআরএলের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব নাসিমুল গনি, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান এবং ইআরএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শরীফ হাসনাত উপস্থিত ছিলেন।
ইআরএলের চেয়ারম্যান নাসিমুল গনি বলেন, ‘সব পক্ষের সমন্বিত প্রচেষ্টা এবং নিরবচ্ছিন্ন তেল সরবরাহের ফলে এ রেকর্ড অর্জন সম্ভব হয়েছে। ৫৭ বছরের পুরোনো এই শোধনাগারে এটি একটি বড় সাফল্য।’
গত অর্থবছরের তুলনায় এবারের শোধন পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। ইআরএলের বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১২ লাখ ৭৯ হাজার টন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৪ লাখ ৪৩ হাজার টন এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৫ লাখ ১৩ হাজার টন তেল পরিশোধন করা হয়েছিল।
সংবাদ সম্মেলনে বিপিসি চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান জানান, ইআরএলের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য দ্বিতীয় ইউনিট স্থাপনের পরিকল্পনা এগিয়ে চলছে। এর উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) ইতিমধ্যে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন মিললেই আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু ইস্টার্ন রিফাইনারি নয়, মহেশখালী ও পায়রা বন্দরে নতুন শোধনাগার নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে সরকারের। মহেশখালীতে ১০ লাখ টন ক্ষমতার একটি শোধনাগারের জন্য জায়গাও নির্ধারণ করা হয়েছে।’
ইআরএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শরীফ হাসনাত বলেন, ‘তেল পরিশোধনের প্রতিটি ধাপ সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হওয়ায় এবার রেকর্ড পরিমাণ শোধন সম্ভব হয়েছে।’
১৯৬৮ সালে স্থাপিত ইস্টার্ন রিফাইনারি বিপিসির মাধ্যমে আমদানি করা অপরিশোধিত তেল শোধন করে। এখান থেকে পেট্রল, ডিজেল, অকটেন, কেরোসিনসহ ১৪ ধরনের জ্বালানি উৎপন্ন হয়। নতুন ইউনিট চালু হলে শোধন ক্ষমতা বছরে আরও ৩০ লাখ টন বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা রক্ষায় দ্রুত সক্ষমতা বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি। স্বাধীনতার অর্ধশতক পেরিয়েও দেশে পরিশোধনাগারের সক্ষমতা তেমন বাড়ানো যায়নি, যার ফলে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ ডলার খরচ করে ডিজেলসহ জ্বালানি তেল আমদানি করতে হচ্ছে।
এফপি/এমআই