কুমিল্লার মুরাদনগরে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসা এক নারী দরজা ভেঙে ঢুকে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। চিৎকার শুনে ছুটে আসা স্থানীয়রা প্রথমে প্রকৃত ঘটনা না বুঝে উল্টো ভুক্তভোগীকেই মারধর করে এবং সেই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। পুলিশ এই ঘটনায় ধর্ষকসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) রাত ১০টার দিকে রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের অভিযোগে ফজর আলী (৩৮) নামের এক ব্যক্তিকে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া ভিডিও ধারণ ও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে মো. সুমন, রমজান আলী, মো. আরিফ ও মো. অনিককে গ্রেপ্তার করা হয়।
ভুক্তভোগী নারীর ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি ১৫ দিন আগে সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। ঘটনার রাতে অভিযুক্ত ফজর আলী তার বাড়ির দরজায় এসে ডাক দেন। দরজা না খোলায় সে ভেতরে জোরপূর্বক প্রবেশ করে তাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসে, কিন্তু প্রথমে কেউ তাকে বিশ্বাস না করে উল্টো মারধর করে এবং সেই ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি পুলিশের নজরে আসে। এরপর পুলিশ ভুক্তভোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করে থানায় মামলা করার আহ্বান জানায়। শনিবার রাতে মুরাদনগর থানায় ধর্ষণ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, “ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর আমরা বিষয়টি জানতে পারি। ভুক্তভোগী নারীকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”
এদিকে স্থানীয়রা জানান, তারা ঘটনার শুরুতে ভুল বুঝে ভুক্তভোগীকে দোষারোপ করেছিলেন, যা নিয়ে এখন লজ্জিত। তারা ভিডিও ধারণ ও ছড়িয়ে দেওয়া ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
পুলিশ জানায়, ভিডিও ধারণ ও ছড়িয়ে দেওয়ার পেছনে আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনা তদন্তে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।
এফপি/রাজ