আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম শুক্রবার সকালে ঘোষণা দিয়েছেন, জুমার নামাজের পর চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু হবে।
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে দেশের সর্বস্তরের মানুষ ঐক্যবদ্ধ। এ ব্যাপারে কোনও গড়িমসি মেনে নেওয়া হবে না।”
সকাল ১১টায় রাজধানীর যমুনা রোডে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে সারজিস আলম এই ঘোষণা দেন। তিনি জানান, জুমার আজানের পর সেখান থেকে মিছিল সহকারে তারা মঞ্চের দিকে যাবেন। ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে জুমার নামাজ আদায়ের পর শুরু হবে চূড়ান্ত আন্দোলন।
এসময় জাতীয় গণতান্ত্রিক দল জাগপার সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধানসহ বিভিন্ন দলের নেতারা বক্তব্য রাখেন। আন্দোলনে জুলাই শহিদ পরিবারের সদস্য ও আহতরাও যোগ দিয়েছেন।
সকাল ১০টার পর থেকে যমুনা রোডে আন্দোলনকারীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। পুরো এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। মিছিলকারীরা স্লোগান দেন: “সাড়া বাংলায় খবর দে, আওয়ামী লীগের কবর দে”, “গোলামী না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ”, “ক্ষমতা না জনতা, জনতা জনতা”, “একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে বিচার কর”, “জ্বালো জ্বালো, আগুন জ্বালো”।
মিছিলকারীরা জানান, তারা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত সেখান থেকে সরবেন না।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাত ১০টায় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে ঘোষণা দেন- আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না পাওয়া পর্যন্ত আজ (বৃহস্পতিবার) রাত ১০টা থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচি চলবে। তিনি বলেন, “যার এজেন্ডায় গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট বয়ান নাই, তার সঙ্গে আমরা নাই।”
সারজিস আলমের রাজনৈতিক পথচলা শুরু হয় ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে। ২০১৯ সালে তিনি ছাত্রলীগ প্যানেল থেকে ডাকসু সদস্য নির্বাচিত হন। ২০২২ সালে তিনি সংগঠনটি থেকে পদত্যাগ করেন। ২০২৪ সালে তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন, যা পরবর্তীতে গণআন্দোলনে রূপ নেয়। এই আন্দোলনের ফলে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে নির্বাসনে যান।
বর্তমানে সারজিস আলম জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জানান, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
এফপি/রাজ