বাংলাদেশের চালের বাজারে এখন ‘মিনিকেট’ ও ‘নাজিরশাইল’ নামে পরিচিত চালের ছড়াছড়ি। তবে কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নামে কোনো ধানের জাত নেই। মূলত, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ জাতের মোটা ধানকে আধুনিক অটো রাইস মিলে ছেঁটে ও পলিশ করে চিকন ও চকচকে করে বাজারজাত করা হচ্ছে এই নামে।
চালগুলো দেখতে আকর্ষণীয় হলেও রান্নার পর ভাত ঝরঝরে হয় না, স্বাদহীন এবং দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। অনেক ভোক্তা অভিযোগ করেছেন, রান্নার ২-৩ ঘণ্টার মধ্যেই ভাতে বাজে গন্ধ ছড়ায় এবং খাওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়ে। এছাড়া, অতিরিক্ত পলিশের কারণে চালের পুষ্টিগুণও হ্রাস পায়।
খাদ্য মন্ত্রণালয় ২০২৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি একটি নির্দেশনা জারি করে, যাতে চালের বস্তায় ধানের জাত, উৎপাদনের তারিখ, মিলের নাম ও মূল্য উল্লেখ করার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। তবে এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে মিল মালিকদের আপত্তি ও সরকারের পরিবর্তনের ফলে তা কার্যকর হয়নি।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, ‘মিনিকেট নামে কোনো ধান নেই। তাই চাল থাকার প্রশ্নই উঠে না।’ তিনি আরও বলেন, মোটা চালকে চিকন করে বেশি দামে বিক্রি করা ক্রেতাদের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণা।
ভোক্তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং চালের মান বজায় রাখতে, সরকারের উচিত কঠোরভাবে নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করা। এছাড়া, ভোক্তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করে প্রকৃত ধানের জাতের চাল কেনার প্রতি উৎসাহিত করা জরুরি।
চালের বাজারে ‘মিনিকেট’ ও ‘নাজিরশাইল’ নামে পরিচিত চালের আড়ালে চলছে প্রতারণা। ভোক্তাদের উচিত সচেতন হয়ে প্রকৃত ধানের জাতের চাল কিনে প্রতারণা থেকে রক্ষা পাওয়া।
এফপি/রাজ