মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাই উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ হলো জলকেলি উৎসব। এসময় দুই দিকে সারি করে রাখা ড্রাম থেকে বাটিতে করে তরুণ-তরুণীরা একে অপরের দিকে পানি ছিটান। নানা আয়োজনে রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে প্রতিবছর উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হয় মারমা সম্প্রদায়ের এই জলকেলি উৎসব। পুরাতন বছরের গ্লানি মুছে যাবে সাংগ্রাই মৈত্রীর জলে এমন বিশ্বাস থেকে পানি খেলায় মেতে উঠেন মারমারা।
বৈসাবি উৎসব পাহাড়ের সংস্কৃতি ও সম্প্রীতির এক মিলনমেলা। এ উৎসবের মাধ্যমে পাহাড়ের মানুষ নববর্ষকে বরণ করে নেন আনন্দ, শান্তি ও শুভকামনায়। ‘বৈসাবি’ হলো ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বৈসু, চাকমা সম্প্রদায়ের বিজু এবং মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই। এই উৎসব পাহাড়ি সংস্কৃতির বহুমাত্রিক রূপকে তুলে ধরে এবং সামাজিক সম্প্রীতি জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পাহাড়ের সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক ‘বৈসাবি’ উৎসব উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন পর্যটকরা। আনন্দমুখর পরিবেশে পালিত হয় এই উৎসব।
এরমধ্যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী বিশেষ করে মারমা ও রাখাইন সম্প্রদায়ের আনন্দঘন নববর্ষ উৎসবের নাম হলো সাংগ্রাই, যা প্রতিবছর এপ্রিলের ১৩ থেকে ১৫ তারিখে পালিত হয়। মারমাদের ক্ষেত্রে তাদের বর্মী বর্ষপঞ্জি অনুসারেই এটি পালিত হয়। “জলকেলি উৎসব” (বা “জল খেলা”)- সাংগ্রাই উৎসবেরই একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
জলকেলি উৎসবের প্রধান আকর্ষণ হলো একে অপরকে পানি ছিটিয়ে দেয়া। তারা বিশ্বাস করে এই জল ছিটানোর মাধ্যমে পুরনো বছরের দুঃখ, পাপ, মন্দ ভাগ্য ধুয়ে যাবে এবং নতুন বছর শুভ হয়ে উঠবে।
সাংগ্রাই উপলক্ষে পাহাড়ি এলাকাগুলোতে মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাচ-গান ও নানা খেলাধুলার আয়োজন করা হয়। এই উৎসবে নেয়া মারমা তরুণ-তরুণীরা, রঙিন ও ঐতিহ্যবাহী পোশাক, গয়না ও অলংকার পরে নিজেদের সাংস্কৃতিক পরিচয়ে তুলে ধরেন। এছাড়া বৌদ্ধ বিহারে গিয়ে প্রার্থনা, প্রবীণদের পা ধোয়া ও আশীর্বাদ গ্রহণ, বুদ্ধমূর্তিতে পানি ঢালা-এসব ধর্মীয় আচারও পালন করা হয়।
এফপি/এমআই