Dhaka, Sunday | 13 April 2025
         
English Edition
   
Epaper | Sunday | 13 April 2025 | English
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ধরে রাখতে সেনাবাহিনী সব করতে প্রস্তুত: সেনাপ্রধান
সম্প্রীতি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন প্রধান উপদেষ্টা
‘ফ্যাসিবাদের মুখ’ ও ‘শান্তির পায়রা’ পুড়ল আগুনে, তদন্তে কমিটি
সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম’ রাখাটা সমীচীন নয়
শিরোনাম:

ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি জোরদার

প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৫, ৯:৪৯ এএম  (ভিজিটর : ১৬)

জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ডিসেম্বরকে কেন্দ্র করে জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী জুন-জুলাইয়ের মধ্যেই ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করতে চায় কমিশন। যদিও ভোটের নির্দিষ্ট দিন-তারিখ এখনও চূড়ান্ত হয়নি, তবে প্রস্তুতিমূলক কাজ ইতোমধ্যে অনেকদূর এগিয়ে গেছে।

ইসি জানায়, ডিসেম্বরেই ভোট আয়োজনের জন্য কাজ করছে ইসি। নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, অক্টোবরের মধ্যেই নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে খসড়া কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ, নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন, সীমানা পুনর্নির্ধারণ, ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ, কর্মকর্তা নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ, প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সংগ্রহ এবং রাজনৈতিক দল ও পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে সংলাপ।

তবে নির্বাচনের সময়সূচি নির্ভর করছে অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত ও রাজনৈতিক ঐকমত্যের ওপর। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, নির্বাচন ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে জুন ২০২৬-এর মধ্যে হতে পারে। রাজনৈতিক ঐকমত্য ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ছাড়া ভোট আয়োজন কঠিন হয়ে উঠতে পারে।

নির্বাচন কমিশন পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে ডিসেম্বরে ভোট হলে তারা কতটা প্রস্তুত তা জানতে। পুলিশ আশাবাদী যে, ডিসেম্বরে ভোট হলে তারা পূর্ণ জনবল সক্রিয় করতে পারবে। তবে ৫ আগস্টের ঘটনার পর পুলিশের স্বাভাবিক কার্যক্রম এখনও পুরোপুরি ফিরেনি।

ভোটার তালিকা হালনাগাদ এখন শেষ পর্যায়ে। চলতি বছরের হালনাগাদ কার্যক্রমে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রায় ৬০ লাখ নতুন ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে এবং ২০ লাখ মৃত ভোটারের তথ্যও তালিকা থেকে বাদ দিতে কাজ চলছে। ইসি আশা করছে, জুনের মধ্যেই এই কাজ শেষ হবে। তবে আইনি জটিলতায় এ তালিকা থেকে নতুন ভোটাররা নির্বাচনে অংশ নিতে না-ও পারেন, যদি না ভোটের আগে আইন সংশোধন করা হয়।

সীমানা পুনর্নির্ধারণও বড় একটি চ্যালেঞ্জ। আদমশুমারি ও কিছু আসনের জটিলতার কারণে নতুন সীমানা নির্ধারণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। কিন্তু বিদ্যমান আইনে ছাপার ভুল রয়েছে, যার কারণে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা যাচ্ছে না। এ জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে সংশোধনী প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, কিন্তু এখনো অনুমোদন আসেনি। ফলে এই কাজও অনিশ্চয়তায় রয়েছে।

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে নয়টি সুপারিশ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (RPO) সংশোধন, আচরণবিধিমালা সংস্কার, রাজনৈতিক দলের আর্থিক স্বচ্ছতা এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষণের নীতিমালা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এসব সুপারিশ ইসির কাছে পাঠিয়েছে, ইসিও আলাদাভাবে কিছু প্রস্তাব তৈরি করছে।

আচরণবিধিমালার খসড়া প্রায় চূড়ান্ত। এতে সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে জানায় ইসি। কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এই প্রক্রিয়ায় সাংঘর্ষিক অবস্থা তৈরি হবে না। বরং এটি একটি সমন্বিত উদ্যোগ।

ইসি ইতিমধ্যে নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আবেদন আহ্বান করেছে। ২০ এপ্রিলের মধ্যে আবেদন জমা নেওয়া হবে এবং জুলাই-আগস্টের মধ্যে নিবন্ধন শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্র চূড়ান্ত করতে ভোটের অন্তত ২৫ দিন আগে গেজেট প্রকাশ করতে হয়। সেই প্রস্তুতিও এগোচ্ছে।

ইতিমধ্যে ভোটের জন্য অর্থ বিভাগে বাজেট বরাদ্দ চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ব্যালট বাক্স, ব্যালট পেপার, অমোচনীয় কালি, সিলসহ বিভিন্ন সামগ্রী কেনা হবে। ব্যালট পেপারের কাগজ কর্ণফুলী পেপার মিল থেকে সংগ্রহ করা হবে এবং ছাপা হবে সরকারি ছাপাখানায়। এই কেনাকাটার কাজও সময়সাপেক্ষ হওয়ায় শুরু করে দিয়েছে ইসি।

রিটার্নিং কর্মকর্তা, প্রিসাইডিং অফিসারসহ ভোট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়োগ তফসিল ঘোষণার পর হবে এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সাবেক প্রধান এবং বর্তমানে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অধিকাংশ সংস্কার অধ্যাদেশ দিয়েই বাস্তবায়ন করা সম্ভব। সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হবে না। তিনি আশা প্রকাশ করেন, রাজনৈতিক ঐকমত্য দ্রুত তৈরি হবে এবং দেশে একটি গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হবে।

ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। আইনি জটিলতা, নিরাপত্তা পরিস্থিতি, রাজনৈতিক ঐকমত্য- সব মিলিয়ে এটি একটি সময়সাপেক্ষ ও সমন্বিত প্রয়াস। তবে ইসি তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী অগ্রসর হচ্ছে, যা ভোটারদের আস্থা ফিরিয়ে আনার দিকেও একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হতে পারে।
সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: financialpostbd@gmail.com, tdfpad@gmail.com
🔝