প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থেকে প্রভাব বিস্তার করেও এবার বিএনপিতে পদ পেয়েছেন এনামুল শিকদার। খুশিতে তিনটি খাসি জবাই করে ভুরিভোজ উৎসব করেছেন তিনি। পটুয়াখালীর বাউফলে এ ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় ও দলীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার (১৪ মার্চ) এনামুল শিকদার উপজেলার কালিশুরী ইউনিয়ন বিএনপির কমিটিতে সদস্য পদে নির্বাচিত হন। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) রাতে কালিশুরী স্কুল সংলগ্ন নিজ বাড়িতে তিনটি খাসি জবাই করে উৎসব পালন করেন তিনি।
উৎসবে উপজেলা পর্যায়ের কয়েকজন নেতৃত্ব স্থানীয় লোকজন যোগদান করলেও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অনুপস্থিত ছিলেন। তবে খাসি জবাই করে উৎসব পালন করলে বিষয়টি নজরে আসে অনেকের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক লোকজন জানায়, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কর্মী ছিলেন এনামুল। তিনি ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি নেছার উদ্দিন শিকদার ওরফে জামাল শিকদারের চাচাত ভাই। পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর তার আপন ফুফা। মৃত্যুজনিত কারণে কালিশুরি ইউনিয়ন বিএনপির কয়েকটি পদ শূন্য হলে সেখানে জায়গা পেয়েছেন এনামুল শিকদার।
বিএনপির ইউনিয়ন পর্যায়ের একধিক নেতাকর্মী জানায়, এনামুল প্রকাশ্যে আওয়ামী রাজনীতিতে যুক্ত থেকে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন এলাকায়। ৫ আগস্টের আগে এলাকায় এনামুল সিকদার ছিলেন এক আতঙ্কের নাম। ২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন। বিরোধী দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে স্থানীয় লোকজনকে নানাভাবে হয়রানি করেন। কালিশুরী বাজারে বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দলিল উদ্দিন মোল্লার একটি ঘরসহ একাধিক জায়গা দখল, সালিশের নামে অর্থ আদায়, চাঁদাদাবিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে এনামুল ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে।
বিএনপির দলীয় কর্মী-সমর্থক, কালিশুরী বাজার কমিটির লোকজন ও এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, এনামুল তার ফুফা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীরের ক্ষমতায় প্রভাব বিস্তার করেছে কালিশুরী বাজারসহ আশপাশের এলাকা। তবে তিনি এখন বিএনপিতে জায়গা করে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে জানতে এনামুল শিকদারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও সেটি রিসিভ হয়নি।
উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আপেল মাহমুদ ফিরোজ বলেন, স্থানীয় বিএনপির নেতারা তিনটি নাম প্রস্তাব করেছিলেন। তাদেরই তিনটি পদের দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে। এনামুল শিকদারের রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এফপি/এমআই