সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় এক সংঘবদ্ধ চক্রের বিরুদ্ধে প্রায় ৯৭ লাখ টাকা মূল্যের ৯৩টি গরু ও মহিষ জোরপূর্বক লুট করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ভুক্তভোগী পরিবার। ঘটনাটি ঘটে গত ১৫ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামে। পরদিন (১৬ নভেম্বর) ভুক্তভোগী ওই গ্রামের মৃত মমশর আলীর ছেলে মো. মদরিছ আলী দোয়ারাবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মদরিছ আলী ও তাঁর পাঁচ ভাই দীর্ঘদিন ধরে গরু-মহিষ লালন পালন ও কৃষিকাজের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। ঘটনার দিন বিকেলে গ্রামের পশ্চিম মাঠে ঘাস খাওয়ানোর পর গরু-মহিষগুলো বাড়িতে ফিরিয়ে আনার সময় আগে থেকেই ওৎ পেতে থাকা একদল সশস্ত্র ব্যক্তি তাদের পথরোধ করে। অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্তরা রামদা, দা, সুলফি ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালিয়ে প্রাণে হত্যার হুমকি দিয়ে ৯৩টি গরু ও মহিষ জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়। স্থানীয়রা এগিয়ে এসে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হয়। লুট হওয়া পশুগুলোর আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৯৭ লাখ টাকা।
ভুক্তভোগীর দাবি, বর্তমানে এসব গরু ও মহিষ সংঘবদ্ধ চক্রটির একটি গোপন আস্তানায় রাখা হয়েছে।
অভিযোগে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন শ্রীপুর গ্রামের আবদুল কাইয়ুম (বাদশা)'র ছেলে নান্নু মিয়া (২৪), মৃত সুরুজ আলীর ছেলে আবদুল কাইয়ুম (৫৫), মমিন মিয়া (৫০), সানিয়া গ্রামের আবদুল হকের ছেলে জামাল হোসেন (২৪), জাবেদ আহমদ (২২), জাকির হোসেন (২০); শ্রীপুর গ্রামের মৃত আফতাব আলীর ছেলে ফারুক মিয়া (৫৫), পারুল মিয়া (৫০) সহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪০–৫০ জন।
অভিযোগে তাদের সবাইকে একটি সংঘবদ্ধ লুটরাজ চক্রের সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগকারী মদরিছ আলী বলেন, “থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরও এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। উল্টো অভিযুক্ত চক্রের পক্ষ থেকে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা চরম আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি।”
অভিযুক্ত আব্দুল কাইয়ুম বলেন, “এধরণের অভিযোগের বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। তবে আমাদের উপর যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।”
তিনি আরো বলেন, “কয়েকদিন আগে বর্ডারে আমার শ্যালক মার্ডার হয়েছে। তাঁর পোস্টমর্টেম হওয়ার পর আমরা গতকালকে (২০ ডিসেম্বর) দোয়ারাবাজার থানায় আমরা একটি মার্ডার মামলা দায়ের করেছি। ওই মামলার আসামী মদরিস আলী আমাদের ওপর অহেতুক লুটপাটের অভিযোগ করেছেন।”
অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দোয়ারাবাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমির হোসেন বলেন, “আমি অভিযোগ পেয়ে এলাকায় গিয়েছিলাম। গরু-মহিষ কিংবা সংশ্লিষ্ট কাউকে পাইনি। আমি এখন ছুটিতে আছি। এটা এখনো তদন্তাধীন।”
এফপি/অ