র্যাবের টিএফআই সেলে গুম এবং শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ২১ জানুয়ারি প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন।
এর আগে সকাল ১০টার পর ঢাকার সেনানিবাসের বিশেষ কারাগার থেকে ১০ জন সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। নিরাপত্তা ব্যবস্থা কড়া ছিল। হাজির করা কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে), র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।
মামলায় অভিযোগ গঠনের দিন প্রথমে নির্ধারিত ছিল ২১ ডিসেম্বর। তবে তিনজন আসামি—তোফায়েল, কামরুল ও মশিউর জুয়েলের পক্ষে শুনানির আবেদন করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। পরে ট্রাইব্যুনাল দুদিন পিছিয়ে আজকের দিন ঠিক করেন। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম পক্ষে আবেদনের বিরুদ্ধে আপত্তি জানান।
মামলায় পলাতক আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ ও র্যাবের সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মো. খায়রুল ইসলাম।
শুনানিতে বিভিন্ন আসামি আলাদা আলাদা যুক্তি উপস্থাপন করে অব্যাহতি চেয়েছেন। এদিকে প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম দাবি করেন, আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর মাধ্যমে মামলাটি এগিয়ে নেওয়া উচিত।
মামলার প্রসিকিউশনের তথ্য অনুযায়ী, ৩ ডিসেম্বর অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ হওয়ার পর টিএফআই সেলের বীভৎস পরিস্থিতি তুলে ধরে দীর্ঘ ১৬ বছর পর নতুন এক বাংলাদেশ উদিত হওয়ার মন্তব্য করা হয়। এ মামলায় ৮ অক্টোবর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর ১৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
এফপি/অ